ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১ জানুয়ারি ২০১৫
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি ও অন্যান্য
  5. খেলাধুলা
  6. গল্প ও কবিতা
  7. জাতীয়
  8. তথ্যপ্রযুক্তি
  9. দেশজুড়ে
  10. ধর্ম ও জীবন
  11. প্রবাস
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. বিশেষ প্রতিবেদন
  15. মুক্তমত
আজকের সর্বশেষ সবখবর

রাজশাহীতে ঘুঘুর খামার

দৈনিক পাঞ্জেরী
জানুয়ারি ১, ২০১৫ ১২:২৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

rajshahiরাজশাহী প্রতিনিধি : শহর থেকে উত্তরে পবা উপজেলার হুজুরিপাড়া ইউনিয়নের ঘিপাড়া গ্রাম। গ্রামের দক্ষিণ-পূর্বে গোলাম মোদাচ্ছের নামে এক ব্যক্তির বাড়ি। বাড়িতে তিনি ঘুঘু পালন করেছে। আর এতে অল্প দিনেই তার সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে।
গোলাম মোদাচ্ছের জানান, দুই বছরে শখের বসে ঘুঘু পালন করা শুরু। এরপর থেকে ঘুঘু বাড়তে বাড়তে এখন তার খামারে ঘুঘুর সংখ্যা ৫০ জোড়া। এসব ঘুঘু এখন বাজারে বিক্রি করছেন তিনি। তা থেকে আয় করছেন বাড়তি টাকা।
পৃথিবীতে ঘুঘুর প্রজাতি রয়েছে ৩৬টি। বাংলাদেশে পাওয়া যায় ৬টি প্রজাতি। আফ্রিকা, ইউরোপ, ভারতীয় উপমহাদেশে এই পাখির দেখা পাওয়া যায়। এই ঘুঘু সাধারণত ১০ থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত বাঁচে। অনেক ক্ষেত্রে ২১ বছর পর্যন্তও টিকে থাকে। ৬ মাস বয়স হলেই ডিম পাড়া শুরু করে। গ্রে-ডায়মন্ড ঘুঘুর ডিমের রং সাদা। ২টি মাত্র ডিম দেয়। সব শ্রেণীর ঘুঘুর ডিম ফুটে বাচ্চা হতে ১৩ থেকে ১৪ দিন সময় লাগে।
তিনি জানান, আমাদের দেশীয় ঘুঘু খাঁচায় পালন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই তিনি বিদেশি জাতের ঘুঘু পালান করেন। এরমধ্যে অন্যতম গ্রে-ডায়মন্ড ডাভ বা ধূসরবর্ণের ঘুঘু। এ ঘুঘুটি অস্ট্রেলিয়ান জাতের। বর্তমানে তার খামারে অনেক অস্ট্রেলিয়ার সাদা ঘুঘু আছে। সেখান থেকে ক্রস প্রজননের মাধ্যমে বিভিন্ন রং-এর ঘুঘু পেয়েছেন তিনি। ক্রস ঘুঘু দেখতে সুন্দর। অস্ট্রেলিয়ান ঘুঘু ওই দেশের আবহাওয়াতে ভালো হয়। তবে দেশেও এই প্রজাতির ঘুঘু পালন সম্ভব।
আবহাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য প্রথমের দিকে ১ জোড়া দেশি ঘুঘুর সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ান ঘুঘুর মিলন ঘটান তিনি। দেশি ও অস্ট্রেলিয়ার ঘুঘুর সঙ্করায়নেও ভালো ফল পেয়েছেন তিনি। শষ্যদানা ঘুঘুর খাদ্য। তবে মজার ব্যাপার হলো ডিম আসার সময়ে অর্থাৎ ঘুঘুর প্রজননকালে ইটের রাবিস খাওয়াতে হয়।
তিনি আরো বলেন, গ্রে-ডায়মন্ড বা সিলভার ডায়্যামন্ড ঘুঘুর ডিম ফুটে ১০ থেকে ১১ দিনেই বাচ্চা বের হয়। বড় হতে ২১ দিন সময় লাগে। পুনরায় খুব শিগগিরই ডিম উৎপাদনের উপযোগী হয়। এভাবে বছরে ১০ থেকে ১২ জোড়া বাচ্চা দেয়।
ডিম উৎপাদন উপযোগী একজোড়া গ্রে-ডায়্যামন্ড ঘুঘুর দাম ২ হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। সিলভার ডায়মন্ড ১ জোড়া ঘুঘুর দাম ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা। এছাড়াও ১ হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকার মধ্যে ১৫ দিন থেকে ২ মাস বয়সের সিলভার ডায়মন্ড ঘুঘু সংগ্রহ করা যাবে।
ঘুঘু পালন করা সহজ। এদের রোগ-বালাই খুব কম হয়। রোগের মধ্যে সাধারণত ঠান্ডা লাগতে পারে। এক্ষেত্রে ঠান্ডা প্রতিরোধক ট্যাবলেট বা সিরাপ পানিতে মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে। তাছাড়া লাইট বা বাল্ব জ্বালিয়ে রাখলে এ রোগ থেকে রক্ষা করা যায়।
গোলাম মোদাচ্ছের জানান, খামার থেকে ঘুঘু বিক্রি করে তিনি বাড়তি অর্থ আয় করেন। তার দেখাদেখি বাড়তি আয়ের জন্য অন্যরা এগিয়ে এসেছে। একই এলাকার কুমড়া পুকুরের হেফাজ উদ্দিন ও পবা থানা পুলিশ দেলোয়ার হোসেন শখের বসে ঘুঘু পালন শুরু করেছেন। তবে জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর বিষয়টিকে অপরাধ হিসেবেই দেখছেন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ড. মিজানুর রহমান জানান, যে কোনো বন্যপ্রাণি খাঁচায় পালন করা দণ্ডনীয়। দেশি-বিদেশি বলে এ ক্ষেত্রে তফাৎ নেই। এ ক্ষেত্রে কেউ যদি ঘুঘুর খামার করতে চায় তাহলে বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অনুমতির প্রয়োজন আছে।
অনুমতির বিষয়ে খামারের মালিক মোদাচ্ছের জানান, এ বিষয়টি তিনি জানেন না। তবে যদি কারো অনুমতির বিষয় থাকে তাহলে অনুমতির জন্য আবেদন করবেন।