হোসেনপুরে টাকা নিয়ে উপবৃত্তির তালিকাভুক্তি, ভুয়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সাজিয়ে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ডাংরী-পানান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাজারুল ইসলাম।
পৃথক অভিযোগে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে জরুরি প্রতিকার চেয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগপত্র ও অন্যান্য সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ডাংরী-পানান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাজারুল ইসলাম অর্ধ শতাধিক ভুয়া শিক্ষার্থীর নামে গত ২৭ আগস্ট উপবৃত্তির টাকা উত্তোলনের সময় হোসেনপুর সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা বিপুল রায়ের কাছে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। ফলে তিনি উপবৃত্তি বিতরণ বন্ধ করে দেন। সঠিক শিক্ষার্থী-অভিভাবক নিয়ে ব্যাংক ম্যানেজারের কাছ থেকে উপবৃত্তির টাকা গ্রহণের পরামর্শ দেন।
এরই ধারাবাহিকতায় প্রধান শিক্ষক মাজারুল বিভিন্ন মহলে চেষ্টা তদবির করে কৌশলে কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে সমুদয় টাকা উত্তোলন করে নিয়ে গেলে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা কিশোরগঞ্জের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ওই অসাধু প্রধান শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
অন্যদিকে, উপজেলার এলাহী নেওয়াজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর (রোল-৭) ছাত্র মো. হৃদয় মিয়ার হতদরিদ্র মাতা বকুলা খাতুনের নিকট ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আমিনুল ইসলাম উপবৃত্তির জন্য অফিস খরচের কথা বলে ১ হাজার টাকা উৎকোচ দাবি করেন। বকুলা খাতুন টাকা দিতে না পারায় তার ছেলের নাম উপবৃত্তির তালিকা থেকে বাদ পড়ে। বিষয়টি তিনি স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের জানিয়ে প্রতিকার না পেয়ে গত ২ সেপ্টেম্বর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে নিকট লিখিত অভিযোগ দাখিল করে জরুরি প্রতিকার দাবি করেন।
উপজেলার ডাংরী পানান সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাজারুল ইসলাম মুঠোফোনে টাকা আত্মসাতের বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন।
এলাহী নেওয়াজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম তার বিরোদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘স্থানীয় একটি স্বার্থান্বেষী মহল তার সুনাম নষ্ট করতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন।’
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম আব্দুল বাছেদ পৃথক দুই অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উভয় বিষয়ে তদন্ত শেষ করে দ্রুত কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম মওলা জানান, তদন্তে টাকা নিয়ে উপবৃত্তির তালিকাভুক্তি ও ভুয়া নামে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি প্রমানিত হলে দুই প্রধান শিক্ষকের বিরোদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।