নিজস্ব প্রতিবেদক : মাঝ বয়সী অমূল্য চন্দ্র বর্মন। বাড়িতে (পঞ্চগড়) তার তিন শিশু সন্তান আর স্ত্রী। জীবিকার সন্ধানে গত ৬ বছর তিনি রিক্শা বইছেন সিদ্দিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায়। অনেক দিন হলো বাড়ি যাওয়া হয় না, তাই ৫ বন্ধু মিলে শুক্রবার রাতে সিদ্ধান্ত নেন বাড়ি যাওয়ার।
সিদ্ধান্তানুযায়ী, শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে অমূল্য ও তার ৪ বন্ধু গবতলী যাওয়ার উদ্দেশে সায়েদাবাদ থেকে ৮ নম্বর বাসে উঠেন। ৭টার দিকে বাসটি কাওরান বাজার সিগনাল অতিক্রম করে তেজগাঁও মহিলা কলেজের সামনে পৌঁছালে পাশ থেকে মটোরসাইকেলে দুই যুবক বাসটি উদ্দেশ করে পেট্রোল বোমা ছোড়ে।
এসময় চার বন্ধু বাসের জানালা ভেঙে বের হতে পারলেও আটকে যান অমূল্য। পরে ফায়ারসার্ভিসের একটি ইউনিট এসে বাসের আগুন নিভিয়ে অমূল্যকে উদ্বার করে। তেজগাঁও থানার এএসআই খোরশেদ আলম তাকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে।
শনিবার দুপুরে সরেজমিনে ঢামেকের বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে গিয়ে দেখা যায়, ৪ নম্বর বেডে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে নিথর পড়ে আছেন অমূল্য। পাশে স্বজনরা না থাকলেও রয়েছেন বন্ধু জাহিদুল ইসলাম। তিনিও ওই বাসে ছিলেন। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে সিটটি জানালার পাশে হওয়ায় তিনি তা ভেঙে বেরিয়ে যেতে পারেন।
বেঁচে যাওয়া জাহিদুলের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অমূল্য চন্দ্র বর্মনের গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড়েরর ময়দানদিঘি ইউনিয়নের কাদেরপুর গ্রামে। বাড়িতে অমূল্যর ৩ ছেলে আর স্ত্রী থাকেন। বড় ছেলে নিতাই (১২), মেজ ছেলে রতন (৭) আর ছোট ছেলে জয় (২)। স্ত্রী রত্না এই তিন সন্তান নিয়ে থাকেন গ্রামের বাড়িতে।
অমূল্য চন্দ্র বর্মনের চিকিৎসার খোঁজ নিতে বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন পর্থ শঙ্কর পালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘অমূল্যর শরীরে তুলনামূলক কম বার্ন হয়েছে। কিন্তু তার শ্বাসনালীতে বার্ন হওয়ায় এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।’