আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গত ১৫ বছর ধরে ‘এনিমি কমব্যাটান্ট’ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারে আটক থাকার পর অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন কাতারের নাগরিক আলি বিন কাহলাহ আল মারি। ছাড়া পা্ওয়ার পর শনিবার তিনি দেশে ফিরেছেন বলে আল জাজিরা জানিয়েছে।
২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার অল্প কিছুদিন পরই আটক করা হয়েছিল আলি বিন কাহলাহ আল মারিকে। তিনি তখন মার্কিন নাগরিক হিসেবে ওয়াশিংটনে অবস্থান করছিলেন। সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িত থাকা এবং ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির অভিযোগে তাকে আটক করেছিল মার্কিন পুলিশ।
মার্কিন সরকার পরে তার বিরুদ্ধে জঙ্গি গোষ্ঠী আল কায়দার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আনে। এই অভিযোগে দীর্ঘ ছয় বছর ধরে একটি নি:সঙ্গ কারাগারে আটক রাখার পর তাকে ‘এনিমি কমব্যাটান্ট’ বা ‘শত্রু যোদ্ধা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর তাকে সামরিক কাস্টডিতে নেয়া হয়।
এ সম্পর্কে রোববার তার আইনজীবী এন্ড্রু জে সাভেজ আল জাজিরাকে জানিয়েছেন,‘২০০৩ সালের জুন থেকে ২০০৪ সালের অক্টেবর পর্যন্ত আল মারিকে চরম অবমাননাকর পরিস্থিতির মধ্যে আটকে রাখা হয়েছিল। কাউকে তার সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হত না। তখন তার ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হয়েছিল। টেপ দিয়ে তার মুখ এবং নাক বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।’
জর্জ ডব্লিউ বুশের শাসনামলে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত থাকার সন্দেহে আটককৃতদের ‘এনিমি কমব্যাটান্ট’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হত এবং কোনোরকম অভিযোগ ছাড়াই তাদেরকে আটকে রাখা হত।
আটক করার দীর্ঘ নয় বছর পর অর্থাৎ ২০০৯ সালে আল মারির বিরুদ্ধে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে বিভিন্ন উপাদান সরবরাহ করার অভিযোগ আনা হয়।
তবে মারির আইনজীবী সাভেজ বলেন, তিনি কোনো সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। দ্রুত কারাদণ্ডের মেয়াদ শেষ করার জন্যই তিনি নিজের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগ কবুল করেছিলেন। ছাড়া পাওয়ার পর তিনি কাতারে তার স্ত্রী এবং পাঁচ ছেলে মেয়ের কাছে ফিরে গেছেন।
আল মারির ছাড়া পাওয়ার কথা ছিল রোববার। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের দুদিন আগেই তিনি ছাড়া পান। শনিবার তিনি দোহা পৌঁছেছেন বলে তার পরিবার জানিয়েছেন। মারি হলেন শেষ ব্যক্তি যিনি ‘এনিমি কমব্যাটান্ট’ অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারে আটক ছিলেন।