নিজস্ব প্রতিবেদক
মলিন মুখ, আধো আধো বোলে স্লোগান ‘আমাদের স্কুল ফিরিয়ে দাও’। লাইমা শিশু শ্রেণীর শিক্ষার্থী। মাথার উপরে আগুনঝরা সূর্য উপেক্ষা করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসেছে নিজের স্কুল বাঁচানোর আকুতি নিয়ে। রাজধানীর মিরপুরে চম্পা পারুল সরকারি প্রাথমিক ভূমি দস্যুদের হাত থেকে ফিরে পেতে এমন আকুতি স্কুলটির শিক্ষার্থীদের।
শনিবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমার অধিকার ফাউন্ডেশন আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিবাদ জানায় স্কুল দখলের বিরুদ্ধে।
বেইলি রোডের সামাজিক শিক্ষাকেন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মিরপুর-২ এর চম্পা-পারুল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। এছাড়াও সৈয়দ আবুল মকসুদ, রুহিন হোসেন প্রিন্স, সিনিয়র সাংবাদিক আবু সাইয়িদ খান, ভাস্কর রাশা এবং জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক শেখ মোহাম্মদ আসলাম প্রমুখ কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করেন।
যখন সন্তানকে নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা মায়ের তখন তিনি এসেছেন স্কুল বাঁচানোর দাবি নিয়ে। শিশু শ্রেণীর ছাত্রী লাইমার মা জুয়েলা। বাংলামেইলকে বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ, অল্প টাকায় লেখাপড়া করাতে সরকারি স্কুলই ভরসা। কিন্তু এই স্কুল যদি না থাকে আমাদের বাচ্চাদের লেখা পড়া আর হবে না।’
প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সংহতি জানাতে এসে কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘এটা অত্যন্ত বেদনার কথা- সরকারি স্কুল দখল হয়ে যাচ্ছে। এখন যাদের শ্রেণীকক্ষে থাকার কথা, তারা বাধ্য হয়ে শহীদ মিনারে এসেছে দাবি আদায়ে। বাংলাদেশে দখলদারিত্বের সংস্কৃতি চলছে। মাঠঘাট, নদী দখল হয়ে যাচ্ছে, এবার যুক্ত হয়েছে স্কুল। এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন। জাতির মেধা ধ্বংসের চেষ্টা। অবিলম্বে এদের বিচারের মুখোমুখি করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’
সাংবাদিক আবু সাইয়িদ খান বলেন, ‘বেইলি রোডের সামাজিক শিক্ষাকেন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মিরপুর-২ এর চম্পা-পারুল প্রাথমিক বিদ্যালয় দুটি ভূমিদস্যুদের আগ্রাসনের নির্মম শিকার হয়েছে। এমনকি ঢাকা শহরের আরও ২৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এরূপ সঙ্কটের সম্মুখীন। গরীবের বিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত এসব বিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সন্তান। যেহেতু বর্তমান সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে সার্বজনীন করার চেষ্টায় ব্রতী আছেন তাই আগ্রাসন সরকারের নীতির পরিপন্থি।’