ঢাকাসোমবার , ১৯ জানুয়ারি ২০১৫
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি ও অন্যান্য
  5. খেলাধুলা
  6. গল্প ও কবিতা
  7. জাতীয়
  8. তথ্যপ্রযুক্তি
  9. দেশজুড়ে
  10. ধর্ম ও জীবন
  11. প্রবাস
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. বিশেষ প্রতিবেদন
  15. মুক্তমত
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ফুলেল শ্রদ্ধায় জুম্মন লুসাইয়ের বিদায়

দৈনিক পাঞ্জেরী
জানুয়ারি ১৯, ২০১৫ ১০:৫২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

lusai-3স্পোর্টস ডেস্ক : মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে এর আগেও এসেছেন অনেকবার। হকি স্টিক নিয়ে কাঁপিয়েছেন মাঠ, জয় করেছেন অসংখ্যা দর্শকের হৃদয়। আজও (সোমবার) এসেছিলেন তিনি, তবে নিথর দেহে। ফুলেল শ্রদ্ধা আর অশ্রুসিক্ত নয়নে বাংলাদেশের কিংবদন্তী হকি খেলোয়াড় জুম্মন লুসাইকে এদিন শেষ বিদায় জানালো ভক্ত-সমর্থক-অনুরাগীরা।
সকালে আবাহনী ক্লাবে নেওয়ার পর দুপুর ১২টায় তার মরদেহ আনা হয় মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে। জুম্মন লুসাইকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হকি স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক খাজা রহমতউল্লাহ, বাংলাদেশ ক্রীড়া পরিষদের সচিব শিবনাথ রায়সহ ক্রীড়াঙ্গনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। কিন্তু দেখা যায়নি হকি ফেডারেশনের সভাপতিকে। এ নিয়ে জুম্মন লুসাই পরিবারেরও ছিল অনুযোগ।
এ সময় ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার বলেন, ‘জুম্মন লুসাই আমাদের গর্ব। অসম্ভব মেধাবী একজন হকি খেলোয়াড়। যিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের হকির প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তাকে হারানোটা আমাদের জন্য, ক্রীড়াঙ্গনের জন্য ও জাতির জন্য বড় ক্ষতি। তার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।’
lusai-2কিংবদন্তি এই হকি খেলোয়াড়ের জন্য কোনো বিশেষ সম্মাননার ব্যবস্থা করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে বীরেন শিকদার বলেন, ‘বিষয়টি আমি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি। আমরা ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও ক্রীড়া পরিষদের পক্ষ থেকে তার সম্মানার্থে বিশেষ কিছু করার চেষ্টা করবো। তিনি আগেই জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত হয়েছেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় আমরা তার হাতে সেই পুরস্কারটিও তুলে দিতে পারিনি। তাকে মরণোত্তর পুরস্কার দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’
ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় বলেন, ‘জুম্মন লুসাই এমন এক প্রতিভা, এমন এক ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, যা দ্বিতীয়বার জন্ম নেবে কি না সন্দেহ। তার সঙ্গে অনেক দিন থাকার সুযোগ হয়েছে। তার মতো ভালো মানুষ কখনো দেখিনি। তার মনের ভেতর হয়তো না-বলা অনেক কথা ছিল, অভিমান ছিল। কিন্তু কাউকেই কখনো তিনি কিছু বলেননি। তিনিই প্রথম বাংলাদেশের হয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন। বিশ্ব একাদশের হয়ে খেলেছিলেন। হকির জন্য নিবেদিতপ্রাণ এই তারকা খেলোয়াড় সবাইকে ছেড়ে চলে গেছেন। তার রুহের শান্তি কামনা করছি।’
ভবিষ্যতে জুম্মন লুসাইয়ের স্মৃতি সংরক্ষণাগার অথবা জাদুঘর বানানোর বিষয়ে আরিফ খান জয় বলেন, ‘জুম্মন লুসাইয়ের অর্জন ও স্মৃতি নিয়ে সংরক্ষণাগার বা জাদুঘর বানানো যায় কি না, সে ব্যাপারে আমরা আলোচনা করবো। তার স্মৃতিকে অম্লান করে রাখার চেষ্টা করবো। যাতে ভবিষ্যতে আমার সন্তান জুম্মন লুসাই, মোনেম মুন্নাদের মতো কিংবদন্তি খেলোয়াড়দের ইতিহাস জানতে পারে।’
বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক খাজা রহমতউল্লাহ বলেন, ‘কিংবদন্তি হকি খেলোয়াড়ের মৃত্যুতে হকি পরিবার গভীরভাবে শোকাহত ও মর্মাহত। তার নামানুসারে হকি স্টেডিয়ামের কোনো গ্যালারির নামকরণ করা যায় কি না, সে বিষয়ে আমরা সভায় আলোচনা করবো। তার স্মৃতিগুলোকে সংরক্ষণ করার চেষ্টা করবো।’
জুম্মন লুসাই হকি খেলা শুরু করেন ১৯৭৮ সালে। আবাহনী ক্লাবের হয়ে খেলেছেন ১৯৮২ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত। ১৯৮২ সালে জাতীয় দলে তার অভিষেক হয়। খেলেছেন ১৯৯০ সাল পর্যন্ত। ১৯৮৫ সালে এশিয়া কাপে প্রথম কোনো বাংলাদেশি খেলোয়াড় হিসেবে হ্যাটট্রিক করার গৌরব অর্জন করেন। ওই বছরই বিশ্ব একাদশে সুযোগ পান। বিশ্ব একাদশের হয়ে খেলেন পাকিস্তান একাদশের বিপক্ষে। আবাহনীর অধিনায়ক হিসেবে ১৯৮৬ ও ১৯৮৭ সালে লিগ শিরোপা জিতেছেন।
গত রোববার বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ৬০ বছর বয়সী জুম্মন লুসাই। আজই তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে সিলেটে নিজের বাড়িতে। সেখানেই হবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া।