নিজস্ব প্রতিবেদক
মুক্তিযুদ্ধের উপসেনাপতি ও সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী একে খন্দকার সম্পর্কে বলতে গিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার আ স ম হান্নান শাহ বলেছেন, ‘একে খন্দকার ‘বাপ কা বেটা’। সত্য প্রকাশ করতে পিছপা হননি। ‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে’ বইয়ে তিনি প্রত্যেকটি সত্য কথা লিখেছেন। তাতে আওয়ামী লীগ নেতাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।’
রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ফ্রি থিংকারস ফোরাম আয়োজিত অ্যামনেস্টি রিপোর্ট: বাংলাদেশে খুন-গুম–অপহরণ-মানবাধিকার ও বিচার ব্যবস্থা শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, একে খন্দকারের লেখা বইটি নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে ব্যাপক আলোচনা চলছে। সংসদেও এনিয়ে একে খন্দকারের সমালোচনা করেন সরকার দলীয় ও বিরোধী দলীয় সাংসদরা। তারা বইটির বাজেয়াপ্তের কথাও বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সমালোচনা করে হান্নান শাহ বলেন, ‘তিনি কায়দা করে বলেছেন শেখ মুজিবের বক্তব্যের সময়ে কাছে ছিলেন কিন্তু শেষ শব্দটা শোনেননি। সেদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ শুনেছে শেখ মুজিব শেষ শব্দ বলেছেন জয় পাকিস্তান।’
‘আওয়ামী লীগ জঙ্গিদের মদদদাতা, আওয়ামী লীগের আমলেই জঙ্গিদের উত্থান হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সেদিন বিএনপি-জামায়াত কেউ ছিল না। ছিল শুধু জাসদ। তারা আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে সন্ত্রাস হয়ে গেল। আমি বলতে চাই, জাসদ একটি জঙ্গি সংগঠন ছিল। তাদেরকে মন্ত্রীসভায় স্থান করে দিয়ে সরকার জঙ্গিদের আশ্রয় দিচ্ছে।’
হান্নান শাহ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার মানুষের মৌলিক অধিকারের উপর বারবার হানা দিয়েছে। অতীতে আওয়ামী লীগ ও জাসদ মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। তাদের শাসনে দেশে মানবাধিকার বলতে কিছু নেই। এখন পদে পদে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। শেখ হাসিনা বলেছিলেন, শেখ মুজিবের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা হবে। শেখ মুজিবের স্বপ্ন ছিল বাকশাল আর শেখ হাসিনা সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছেন।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ধাপে ধাপে বাকশাল কায়েমের লক্ষে একটার পর একটা আইন পরিবর্তন করছে।’
মানবাধিকার কমিশনকে উদ্দেশ করে হান্নান শাহ বলেন, ‘মানবাধিকার কমিশন দেশের মানবাধিকার রক্ষা করতে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারে নাই। তাদের উচিৎ কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সবার পদত্যাগ করা।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে.জে. (অব) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি নোংড়া হয়ে গেছে। এর থেকে বের হয়ে আসতে হবে। অন্যথায় রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক অবস্থা থাকবে না। আমরা মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা থেকে সরে গেছি। তাই আজ মানুষের বাক স্বাধীনতাকে হরণ করা হয়েছে। অভিশংসনের ফলে বিচার ব্যবস্থা আরো কঠিন সঙ্কটে পড়বে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হবে।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি জাহাঙ্গির চৌধুরীর সভাপতিত্বে এসময় আরো বক্তব্য দেন স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ, নগর আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ, কল্যাণ পার্টির সহসভাপতি শাহিদুর রহমান তামান্না প্রমুখ।