মিরসরাই প্রতিনিধি
আর দ্বিতীয় স্বামী একই স্কুলের শিক্ষক দুই সন্তানের জনক সাইফুল আলম। শিক্ষিকা নাছিমার ঘরেও রয়েছে একটি সন্তান। সাইফুল- নাছিমা দম্পতির প্রেম বিয়ের খবর এখন টক অব দ্যা মিরসরাই। শিক্ষক-শিক্ষিকার এই ঘটনায় বিব্রত স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পরিচালনা পরিষদ এবং অভিভাবকরা।
১৯৯৭ সালের ৩ জানুয়ারি মিঠানালা ইউনিয়নের জাহাঙ্গীর আলমের একই ইউনিয়নের নাছিমা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীর পরকীয়া নিয়ে তাদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়ন চলতে থাকে। নাছিমা আক্তার তখন সুফিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করতেন।
২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তার কলেজ জীবনের প্রেমিক জোরারগঞ্জ স্কুলের শিক্ষক সাইফুল আলমের সহযোগিতায় সুফিয়া স্কুল থেকে চলে আসেন খণ্ডকালীন শিক্ষিকা হিসেবে জোরারগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে। জোরারগঞ্জ স্কুলে যোগ দেয়ার পর নাছিমা আক্তার বাসা ভাড়া নেন সাইফুল ইসলামের বাসার পাশে। তখন থেকে সাইফুলের সঙ্গে নাছিমার অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
বিষয়টি নাছিমার স্বামী জাহাঙ্গীর জানতে পারলে শুরু হয় টানাপড়েন। এক পর্যায়ে ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর নাছিমা ডিভোর্স লেটার পাঠায় জাহাঙ্গীরকে। ২০১৩ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাহের ভূইয়ার উপস্থিতিতে সালিসি পরিষদে নাছিমা ভিভোর্স লেটার প্রত্যাহার করে নেন। তারা আবার সংসার শুরু করেন।
কিছুদিন পর জাহাঙ্গীর ওমান চলে যান। এই সুযোগে নাছিমা আক্তার আরো ঘনিষ্ট হন প্রেমিক সাইফুল আলমের সঙ্গে। প্রথম স্বামীর সংসারে থাকা অবস্থায় ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল চট্টগ্রামের চকবাজার কাজী অফিসে গিয়ে সাইফুল আলমকে বিয়ে করেন।
সাইফুলকে বিয়ে করার বিষয়টি গোপন রাখেন নাছিমা আক্তার। তাদের দুজনের চলাফেরায় জোরারগঞ্জ স্কুলের শিক্ষকদের সন্দেহ হলে সাইফুল প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিনের কাছে বিয়ের বিষয়টি স্বীকার করেন।
নাছিমার প্রথম স্বামী জাহাঙ্গীরের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নাছিমার সঙ্গে তার সংসার চলছে। প্রতিদিনই যোগাযোগ হয়।
সাইফুলের সঙ্গে তার স্ত্রীর বিয়ের খবর শুনে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, “লম্পট সাইফুলের কারণে সুখের সংসার তছনছ হয়ে গেছে।”
জোরারগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইফুল আলম বলেন, “স্কুলের সহকর্মী শিক্ষকরা আমার আর নাছিমার নামে অপপ্রচার শুরু করলে অসহায় নাছিমাকে অপবাদের হাত থেকে রক্ষা করতেই বিয়ে করেছি।”
নাছিমার আগের স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স প্রত্যাহার করে সংসারে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি জানতেন না। বিয়ের পূর্বে নাছিমার সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে চলা অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
শিক্ষিকা নাছিমা আক্তার সাইফুল আলমের সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ের কথা স্বীকার করেন। প্রথম স্বামী জাহাঙ্গীরের সঙ্গে ডিভোর্স হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
জোরারগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিন বলেন, “আমার জানামতে সাইফুল-নাছিমার সম্পর্ক নিয়ে স্কুলে শিক্ষার পরিবেশের ওপর প্রভাব পড়ছে না।”
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি নাছির উদ্দিন দিদার বলেন, “শিক্ষক নাছিমা আর সাইফুলের প্রেম বিয়ের খবরে আমরা খুবই বিব্রত। আমি নাছিমা আক্তারকে পদত্যাগ করার পরামর্শ দিয়েছি।”
এক সঙ্গে দুইজন স্বামীর সংসারের বিষয়ে একাধিক মাওলানার সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেন, “প্রথম স্বামীর সংসারে থেকে দ্বিতীয় বিয়েটি শরীয়ত সমর্থন করে না। এটি অবৈধ বিয়ে বলে বিবেচিত হবে।”