ঢাকারবিবার , ১৯ ডিসেম্বর ২০২১
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি ও অন্যান্য
  5. খেলাধুলা
  6. গল্প ও কবিতা
  7. জাতীয়
  8. তথ্যপ্রযুক্তি
  9. দেশজুড়ে
  10. ধর্ম ও জীবন
  11. প্রবাস
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. বিশেষ প্রতিবেদন
  15. মুক্তমত
আজকের সর্বশেষ সবখবর

জেনারেশন খাতে এগিয়ে যাচ্ছে আরপিসিএল

নিজস্ব প্রতিবেদক
ডিসেম্বর ১৯, ২০২১ ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে (জেনারেশন) রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড ১৯৯৪ সালে যৌথ মূলধনী কোম্পানী ও ফার্মসমূহের নিবন্ধক এর দপ্তর হতে একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানী হিসেবে নিবন্ধিত হয়।
প্রতিষ্ঠার পরপরই আরপিসিএল একটি অশুভ শক্তির কালো থাবায় বাধাগ্রস্ত হলেও থেমে যায়নি এর গতিপথ। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সাবসিডিয়ারী প্রতিষ্ঠান রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (আরপিসিএল)। ১৯৯৮ সালে ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যাত্রা শুরু হয়। এটি ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জে অবস্থিত। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এবং ৫টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নিয়ে এর কার্যক্রম শুরু হলেও বর্তমানে ১৭টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এবং বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) এর শেয়ার হোল্ডার। আরপিসিএল ৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মাধ্যমে বর্তমানে ৩৯২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিপিডিবি-আরপিসিএল) যৌথ মালিকানায় গাজীপুরস্থ কড্ডায় প্রতিষ্ঠিত বি-আর পাওয়ারজেন বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ২০১৫ সাল থেকে জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ করে আসছে। বছরের পর বছর ধরে আরপিসিএল নতুন নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালন এবং রক্ষণাবেক্ষণে ব্যাপক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণসহ একটি অনুকরণীয় আদর্শ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে আরপিসিএল বিদ্যুৎ সেক্টরে আলোচিত একটি প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে আরপিসিএল স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
বিদ্যুতের গুনগতমান, প্রকল্প বাস্তবায়ন, নির্ভরযোগ্যতা, নিরাপত্তা এবং পরিচালনায় শ্রেষ্ঠত্বও অর্জন করেছে আরপিসিএল। ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জে প্রতিষ্ঠিত আরপিসিএল ২১০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ করে আসছে। এটি আন্তর্জাতিক মানের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
চট্টগ্রামের রাউজানে আরপিসিএল এর রয়েছে আরও একটি ২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ডুয়েল ফুয়েল পাওয়ার প্লান্ট। এছাড়াও গাজীপুরে কড্ডায় প্রতিষ্ঠিত ১০৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এইচএফও ফায়ার্ড (ফার্নেস অয়েল) পাওয়ার প্লান্টও আরপিসিএল’র মালিকানায় চলমান রয়েছে। গাজীপুরের কড্ডায় আরও একটি ৫২ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ডুয়েল ফুয়েল বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জে গ্যাস চালিত ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রর পাশেই ৪২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ডুয়েল ফুয়েল কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ চলমান রয়েছে।
অন্যদিকে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ৬শ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ২০২৭ সাল নাগাদ জাতীয় গ্রীডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সক্ষম হবে বলে জানা গেছে। এছাড়া গজারিয়ায় আরও একটি ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে আরপিসিএল। যা ২০২৪ সাল নাগাদ উৎপাদনে আসবে বলে কর্তৃপক্ষ আশা প্রকাশ করেন। গত ১০ আগস্ট একনেকে জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জে ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যা আরপিসিএল’র মালিকানায় নির্মিত হবে। এতে ঐ অঞ্চলের জনগোষ্ঠির আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আসবে এক বৈপ্লবিক পরির্বতন। সরকার ২০৩০ সাল নাগাদ আরপিসিএলকে ২৭৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু আরপিসিএল কর্তৃপক্ষ ২০২৭ সাল নাগাদ এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে নানামুখী প্রকল্প গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নে ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। ফলশ্রুতিতে নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই আরপিসিএল জাতীয় গ্রীডে ২৭৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সক্ষম হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদন, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় আরপিসিএল’র সঙ্গে যৌথ মালিকানায় বেশ কয়েকটি দেশী বিদেশী প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসেছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে আরপিসিএল এর যৌথ মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত বি-আর পাওয়ারজেন অন্যতম। বিপিডিবি-আরপিসিএল ১৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ডুয়েল ফুয়েল বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চট্টগ্রামের মিরসরাইতে অবস্থিত। এছাড়াও রুরাল পাওয়ার কোম্পানী লিমিটেড ও চীনের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান ‘সেনজেন স্টার’ এর যৌথ মালিকানায় টঙ্গীতে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ পাওয়ার ইক্যুপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানী লিমিটেড (বিপিইএমসি) স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার তৈরির ক্ষেত্রে আরেক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। যা আরপিসিএল’র আরেকটি বড় অর্জন। স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটারিং এর পাশাপাশি গ্রাহকদের সুবিধার্থে বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রকারের যন্ত্রাংশ তৈরির কাজও শুরু করেছে বিপিইএমসি। এতে সেবা প্রত্যাশিরা উন্নতমানের যন্ত্রাংশ স্বল্পমূল্যে ব্যবহারের সুযোগ পাবেন এবং ভোগ করবে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা। বিদ্যুৎ উৎপাদন ছাড়াও আরপিসিএল বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট যন্ত্রাংশ প্রস্তুতের ক্ষেত্রে আরেকটি মাইল ফলক হিসেবে এগিয়ে যাবে বলে অভিজ্ঞ মহল আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড এবং চায়না সরকারের নরিনকো ইন্টারন্যাশনাল পাওয়ার লিমিটেড (আরএনপিএল) যৌথ মালিকানায় পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার নিশানবাড়ীয়া, ধানখালী ও লোন্দা মৌজায় পটুয়াখালী ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণের ফলে দক্ষিণাঞ্চলের অবহেলিত জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক গতি ফিরে আসবে বলে সচেতনমহল মনে করেন।