ঢাকামঙ্গলবার , ১৭ অক্টোবর ২০২৩
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি ও অন্যান্য
  5. খেলাধুলা
  6. গল্প ও কবিতা
  7. জাতীয়
  8. তথ্যপ্রযুক্তি
  9. দেশজুড়ে
  10. ধর্ম ও জীবন
  11. প্রবাস
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. বিশেষ প্রতিবেদন
  15. মুক্তমত
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মালিবাগ অফিসার্স কোয়ার্টারের উন্নয়নে বরাদ্দের অর্থ লুটপাট
রাজউকের মালিবাগ অফিসার্স কোয়ার্টারে মাদকের হাট!

বিশেষ প্রতিবেদক
অক্টোবর ১৭, ২০২৩ ৯:১৫ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সদর দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. আবুল কালাম আজাদ-এর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। রাজউকের একজন প্রভাবশালী পরিচালকের নাম ভাঙিয়ে আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট কর্তৃপক্ষের চোখে ধুলো দিয়ে রাজউকের মালিবাগ অফিসার্স কোয়ার্টারের উন্নয়নের নামে প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আবুল কালাম আজাদের ছত্রছায়ায় মালিবাগ অফিসার্স কোয়ার্টারের ভেতরে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। প্রতিবছর মালিবাগ কোয়ার্টারের অভ্যন্তরীণ উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও লোকদেখানো ও দায়সারা কাজ করিয়ে ঠিকাদার এবং আবুল কালাম আজাদের সিন্ডিকেটটি মোটা অংকের অর্থ লুটপাট করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ডেঙ্গুর ভয়াবহতা সম্পর্কে রাজধানীবাসীকে সচেতন করার লক্ষ্যে রাজউক কর্তৃপক্ষ লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও খোদ রাজউকের মালিবাগ অফিসার্স কোয়ার্টারের বিভিন্ন ভবনের সামনে জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গুর লার্ভা দেখা যায় দৈনিক পাঞ্জেরী’র অনুসন্ধানে। জানা গেছে, ঐ কোয়ার্টারে বসবাসরত একজন উপ-পরিচালক ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মালিবাগ অফিসার্স কোয়ার্টারের সামনে উন্মুক্ত অবস্থায় ময়লার বাগাড় থাকায় পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। অথচ এসব দেখভালের জন্য যেন কেউই নেই। কোয়ার্টারের উন্নয়নে পর্যাপ্ত বরাদ্দ থাকলেও মানহীন এবং অপরিকল্পিত কর্মযজ্ঞের কারণে এর সুফল ভোগ করতে পারছেন না কেউ। নিম্নমানের কাজ এবং একই কাজ বারবার করিয়ে অর্থের অপচয় হলেও কোনো জবাবদিহিতা নেই এখানে। শুধু তাই নয়, পাম্পচালক সুমনের নেতৃত্বে মালিবাগ অফিসার্স কোয়ার্টারের মধ্যেই ইয়াবা, ফেন্সিডিল, মদ বিক্রি হচ্ছে দেদারছে। যার খদ্দের হলেন- অফিস সহকারী (কেরানী) আবু ইউসুফ, গাড়িচালক ইলিয়াস, মেকানিক আবুল কাশেম ওরফে জামাই কাশেম, গাড়িচালক বেলালসহ বহিরাগত মাদকসেবীরা। মেকানিক আবুল কাশেম ওরফে জামাই কাশেমের নেতৃত্বে চলে ক্যাসিনো। এর আগেও গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। আগে মদের আসর, জুয়ার আসর ও ক্যাসিনো চলতো পার্কিংয়ের রুমে। বর্তমানে ড্রাইভার সোহরাবের রুমে ২য় তলায় ডরমেটরিতে চলে এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ড। রাতের বেলায় ড্রাইভার ইলিয়াস এবং সোহরাবের রুমে বহিরাগতরা মাদক সেবনের জন্য আনাগোনা করে। ইতিপূর্বে মাদক বিক্রির দায়ে পাম্পচালক সুমনকে ডিবি পুলিশ রাজউক প্রধান কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তিনি সাময়িক বরখাস্ত এবং তার বিরুদ্ধে ঢাকা সিএমএম কোর্টে মাদক আইনে মামলা চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে।
সূত্র জানায়, মালিবাগ কোয়ার্টারের ৪নং ভবনের উপরে স্টীল ফ্রেমের ছাউনি ছিল। পাম্পচালক সুমন করোনাকালীন সরকারি বন্ধের মধ্যে সকল স্টীল ফ্রেম কেটে আনুমানিক ৪ টন স্টীল বিক্রি করলেও সংশ্লিষ্টরা যেন না দেখার ভান করে আছে। সম্প্রতি ৩নং ভবনের ৪ তলায় জলছাদে ৪ ইঞ্চির বদলে মাত্র ১ ইঞ্চি ঢালাই দেওয়া হয়েছে ঠিকাদার ইরানের মাধ্যমে। এভাবে পছন্দের ঠিকাদার দিয়ে উন্নয়নের নামে ঝুঁকিপূর্ণ এবং মানহীন কাজ করিয়ে লাখ লাখ টাকা বিল পরিশোধ করে লুটপাট করে আসছেন আবুল কালাম আজাদ সিন্ডিকেট। আরও জানা গেছে, হাতিরঝিল প্রকল্পে জনবল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ‘আল-আরাফাত সার্ভিসেস (প্রাঃ) লিমিটেড’-এর স্বত্তাধিকারী বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে যোগসাজশ করে প্রায় ১৫০ জনের বদলে শুধুমাত্র ৫০ জনকে ৮ ঘণ্টা করে ২ শিফট কাজে লাগিয়ে মোটা অংকের অর্থ আত্মসাৎ করে আসছেন আবুল কালাম আজাদ সিন্ডিকেট। বছরের পর বছর অনিয়ম-দুর্নীতি ও লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করলেও ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছেন আবুল কালাম আজাদ সিন্ডিকেট। মালিবাগ অফিসার্স কোয়ার্টারে এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ড দীর্ঘদিন ধরেই ‘ওপেন সিক্রেট’ হিসেবেই চলে আসছে। সিন্ডিকেটটি এতই শক্তিশালী যে কেউ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে সাহস পান না।
অভিযোগের ব্যাপারে সদর দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। তবে তার পেটুয়া বাহিনী দিয়ে প্রতিবেদককে বিভিন্ন মাধ্যমে শাসিয়েছেন আবুল কালাম আজাদ।
বোদ্দা মহল মনে করেন, পরিকল্পিত নগরায়ণের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতকল্পে ঢাকা মহানগরীর উন্নয়ন পরিকল্পনা ও উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণে প্রধান ভূমিকা পালন করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এই বিশাল কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নের দায়িত্বে যারা রয়েছেন তারাই যদি মাদকের নেশায় বুদ হয়ে থাকেন কিংবা এ ধরনের অসুস্থ পরিবেশের মধ্যে বসবাস করেন তবে ঢাকার উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রণীত মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যত্যয় ঘটতে পারে।