দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের চৌহাটি, বাঁশপুকুর, কাজীপাড়ার মধ্যবর্তী স্থানে কৃষি ও বসতবাড়ি রক্ষা কমিটির এবং জীবন ও বসতভিটা রক্ষা কমিটির বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারীতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা। গত মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারীতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপত্বি করেন ও বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট্য সমাজসেবক মাষ্টার এনামুল হক। এতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টা এস.এম নুরুজ্জামান আব্দুল্ল্যাহ। প্রধান উপদেষ্টা এসএম নুরুজ্জামান আব্দুল্ল্যাহ বলেন, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারিতার কারণেই আজ আমাদের এই প্রতিবাদ সভা। কয়লাখনি কর্তৃপক্ষের নিকট ৫ দফা দাবি আদায়ের লক্ষে ৩ গ্রামের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দাবি আদায়ের প্রতিবাদ করলেও খনি কর্তৃপক্ষ কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না। দীর্ঘ ২ যুগ ধরে এই এলাকার মানুষ অধিকার আদায়ে প্রতিবাদ করলেও ফলাফল কিছুই হয়না। আমলারা খনি এলাকার মানুষকে বোকা ভেবে একের পর এক ধোকা দিয়ে যাচ্ছেন। শত শত বাড়িঘর কবরস্থান, স্কুল কলেজ, মাদ্রাসা ধ্বংস হয়ে গেছে। আর ধ্বংস করতে দেওয়া হবে না। এ জন্য আন্দোলনের বিকল্প নাই। আমরা আর সময় দিতে রাজি না। যা কিছু ছিল সব শেষে হয়ে গেছে এখন নতুন করে ৩টি গ্রাম গ্রাস করার পরিকল্পনা করেছে। আমরা এখন থেকে কয়লখনি কর্তৃপক্ষকে জানাতে চাই যা ক্ষতি করেছেন আর করার চেষ্টা করবেন না। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কৃষি ও বসতবাড়ি রক্ষা কমিটির সভাপতি মাহামুদুন্নবী সোহান, সহ-সভাপতি মাহামুদুন্নবী মিলন, সাধারণ সম্পাদক সালমান মাহামুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবু হানিফ এবং জীবন ও বসতভিটা রক্ষা কমিটির সভাপতি মতিয়ার রহমান, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক, সহ-সাধারণ সম্পাদক এসএম তানজিদ আলী, সহ-সাধারণ সম্পাদক হাসেম মোঃ আলী। ৩টি গ্রামের প্রায় ৪ হাজার নারী পুরুষ ও স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিবাদ সভায় অংশগ্রহণ করেন। ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের মধ্যে রয়েছে; ১। অবৈধ্যভাবে ভূগর্ভে বিস্ফোরক ব্যবহারের কারনে সকল ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িঘরের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে; ২। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার সকল রাস্তাঘাট মেরামত করতে হবে। ৩। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার বেকার ছেলে ও মেয়েদের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকুরী দিতে হবে। ৪। সি.এস.আর ফান্ড হতে সুবিধা বঞ্চিত অসহায় মানুষ সহ সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠিানকে আর্থিক সহযোগিতা করতে হবে। ৫। ক্ষতিগ্রস্থ সকল এলাকায় সুপেয় পানির সমস্যা সমাধারণ করতে হবে। আমাদের ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টা, খনি কর্তৃপক্ষ ও পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরকে অবগত করলেও আজ পর্যন্ত কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছেনা। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে আর কতদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই গ্রামে বসবাস করব? এই এলাকার ভূ-গর্ভ থেকে কয়লা তোলার কারণে প্রতিনিয়ত দেবে যাচ্ছে। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কর্মকর্তা কর্মচারীরা লাভবান হলেও এলাকার গ্রাম ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এই বিষয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি। পরিশেষে সভাপতি বলেন, আমাদের আজকের এই সমাবেশে ৫ দফা দাবী মেনে না নিলে আগামীতে কঠোর থেকে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। ঘেরাও করা হবে কয়লা খনি।