বিসিকের অবসরপ্রাপ্ত এবং বিতর্কিত কর্মকর্তা ড. মোঃ আব্দুস ছালামকে বিসিক এর পরামর্শক পদে নিয়োগ দানের কার্যক্রম চলছে। তাকে বিসিকের পরামর্শক হিসাবে নিয়োগ দান করা হলে বিসিকের স্থিতিশীলতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ড. মোঃ আব্দুস ছালাম সরকারের অবসরপ্রাপ্ত একজন যুগ্ম-সচিব। বর্তমানে তিনি উগ্র মৌলবাদী সংগঠন (শাদপন্থী) তাবলীগ জামাতের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় একজন নেতা। বিসিকের পরিচালক পদে দায়িত্বপালন কালীন সময়ে আইনের অপব্যাখ্যা দিয়ে ৬ জন কর্মকর্তা ও ১ জন কর্মচারীকে বেআইনী ভাবে বিসিকের চাকুরী হতে বরখাস্ত করার ক্ষেত্রে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। যা সংশ্লিষ্ট নথি অবলোকন করলে ড. মোঃ আব্দুস ছালামের বেআইনী মতামতের সাথে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যাবে। বরখাস্তকৃত ৬ জন কর্মকর্তার মধ্যে উপ-ব্যবস্থাপক সমমানের ৫ জন কর্মকর্তা জামিল হোসেন, মোঃ নুরুল ইসলাম, মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন, মোঃ আজাদ হোসেন এবং মোঃ শওকত হোসেন আদালতের নির্দেশে চাকুরী ফেরত পেয়ে বিসিকের চাকুরীতে পুনর্বহাল হয়েছেন। বরখাস্তকৃত কর্মচারী মোঃ বেলাল হোসেন (উচ্চমান সহকারী) আদালতের নির্দেশে চাকুরী ফেরত পেয়ে বিসিকের চাকুরীতে পুনর্বহাল হয়েছেন। ড. মোঃ আব্দুস ছালামের আক্রোশের শিকার হয়ে বেআইনী ভাবে বরখাস্ত হওয়া সহকারী প্রকৌশলী সেহেলী সাদিক আজ অবধি চাকুরী ফেরত পাননি। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণে বিসিকের চাকুরীতে কর্মরত থাকার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না বিসিক প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিউটের ক্যাটালগার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরকে। মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির দীর্ঘ ৫ বছর বেতন ভাতাবিহীন অবস্থায় পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন ড. মোঃ আব্দুস ছালামের বেআইনী মতামতের কারণে। সেই থেকে বিসিকের কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের কাছে ড. মোঃ আব্দুস ছালাম একজন অমানবিক কর্মকর্তা হিসাবে পরিচিত। ড. মোঃ আব্দুস ছালাম বিসিকে কর্মরত থাকাকালীন নিয়োগ কমিটি ও বাছাই কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালনকালে বেআইনী এবং বিতর্কিত নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। নিয়োগ দান করেছেন যোগ্যতাবিহীন মহাব্যবস্থাপক পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে,বিভিন্ন পদে বেআইনীভাবে নিয়োগ দান করেছেন তার পছন্দের লোকজনকে। যার কারণে তার দায়িত্ব পালনকালীন সময়ের বেআইনী নিয়োগের বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তাধীন আছে। ড. মোঃ আব্দুস ছালাম অপ্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ কর্মসূচী প্রণয়ন করে সততার আড়ালে সম্মানী ভাতার নামে অবৈধভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা রোজগারের কর্মকৌশল প্রণয়ন করেছেন। তার বিতর্কিত বেআইনী কর্মকাণ্ড চরম অসন্তোষ দেখা দেয়ার কারণে সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে অতি অল্প সময়ের মধ্যে বিসিক থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের স্বার্থ বিরোধী এবং অমানবিক আচরণের সাথে জড়িত ড. মোঃ আব্দুস ছালামকে বিসিকের পরামর্শক পদে নিয়োগ দান করা হলে বিসিকে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিবে বলে অনেকেই মত প্রকাশ করেছেন। সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে উগ্র মৌলবাদের সমর্থক, বেআইনী কার্যক্রমে সিদ্ধহস্ত, অমানবিক আচরণকারী ড. মোঃ আব্দুস ছালামকে বিসিকের পরামর্শক পদে নিয়োগ দান হতে বিরত থাকার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা জাতীয় স্বার্থে একান্ত প্রয়োজন। বিশেষ করে বিসিক চেয়ারম্যান এবং শিল্প সচিব এক্ষেত্রে যথাযথ ভূমিকা পালন করবেন-এমনটাই প্রত্যাশা করছেন বিসিকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ।