চাঁদাবাজ, ভূমি দস্যু ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা আউয়াল মীরের বিচার দাবি করেছেন বাগেরহাট জেলা সদরের শ্রীঘাট সদুল্লাপুর রঘুনাথপুর ও উৎকূল এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা। সোমবার ১০ মাস বিকেলে শ্রীঘাট উৎকূল সড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আউয়াল মীরের বিচার দাবি করেন তারা। আউয়াল মীর শ্রীঘাট এলাকার লোকমান মিরের ছেলে। তার ভাই বাবর আলী মীর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের যুগ্ম সচিব পদে চাকুরি রত রয়েছেন। মূলত সচিব ভাইয়ের ক্ষমতায় আওয়াল মীর এলাকায় নানাবিধ অপরাধ ও অপকর্ম চালান বলে জানান স্থানীয়রা। স্থানীয়রা আরো জানায়, আউয়াল মীর বাংলাদেশ ষাটগম্বুজ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৮ নং ওয়ার্ডের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ১/১১ এর সময় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য দীর্ঘদিন কারাবরণ করে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজি, ভূমি ও ঘের দখল এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য বিএনপি-জামাত নেতাকর্মীদের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে ওঠে। এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৩০ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে আহত করেছে। তিনি বিভিন্ন লোককে এখনো হুমকি দিয়ে বলেন তোদের দল এখনও ক্ষমতায় আসেনি, পারলে আমায় ঠেকাস। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জামায়াত-বিএনপি এবং তারেক রহমানকে নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে পোস্ট দিতের। উপ সচিব ভাইয়ের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বেশ কয়েকটি মৎস্য খামার দখল করেন। এখনও সেই ক্ষমতার দাপট অব্যাহত রেখেছেন । ৯ মার্চ সকাল ৬টায় স্থানীয় সাঈদ মীর, শেখ মনসুর, শেখ মাসুম, শেখ আলামিন, জাহিদ মীর, শেখ আব্দুল মান্নান ও শেখ মানসুরসহ ১০-১২ জন সন্ত্রাসীকে সঙ্গে নিয়ে রঘুনাথপুর এলাকার শেখ মিজানুর রহমানের মৎস্য খামার থেকে আড়াই লক্ষাধিক টাকার চিংড়ি ও সাদা মাছ ধরে নিয়ে যান। সাবেক ইউপি সদস্য শেখ মহিদুল ইসলামের থানায় দায়েরকৃত অভিযোগে জানা যায়, এলাকায় নানাবিধ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের হোতা আউয়াল মীর ওয়াপদার খাল দখল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। ১০ মার্চ সকাল ৯ টায় সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত হয়ে লক্ষাধিক টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যাযন তিনি। এ সময় পারভেজ, মিজান, শহিদুলসহ কয়েকজনকে লোহার রড ও বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। স্থানীয়রা আরও জানান, সরকারি কর্মকর্তা ভাইয়ের ক্ষমতার অপব্যবহার করে এ পর্যন্ত স্থানীয় আমিরুন বেগম, আদালত শেখ, লিটন সরদার, শেখ মোসলেম উদ্দিন, শেখ মনসুর আলী, কাওসার শেখ, জামিলা বেগম, শেখ কামরুল ও শান্ত মেম্বারসহ ৩০ এর অধিক লোককে পিটিয়েছে আউয়াল মীর। থানায় মামলা দিতে গেলে মামলা নেয় না পুলিশ। এতদিন সবাই মুখ বুঝে তার অত্যাচার সহ্য করেছেন। এখন তারা আওয়ামী লীগ নেতা আউয়াল মীরের বিচার দাবি করেছেন। জানতে চাইলে আউয়াল মীর বলেন, আমি ব্রেন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বাগেরহাটের বাইরে চিকিৎসাধীন রয়েছি। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তার কোন ভিত্তি নেই। বাগেরহাট সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ উল হাসান জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।