যশোরের কেশবপুরে গবাদি পশুর প্রধান খাদ্য বিচালির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে গরুর অন্যান্য সুষম খাদ্যের দামও। গত কয়েক বছর ধরে কেশবপুরের প্রধান প্রধান নদী খনন না করায় সৃষ্ট বন্যার কারণে অধিকাংশ নিচু এলাকায় গত মওসুমে আমন ধান আবাদ হয়নি। এ কারণে বিচালির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ৫’শ টাকায়ও মিলছে না এক পোন (২০ গোন্ডা) বিচালী। এতে দিশেহারা হয়ে অনেক খামারী ও চাষী লোকসান এড়াতে কম দামে গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন।কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার প্রধান প্রধান নদী খনন না করার
কারণে সৃষ্ট পানিবদ্ধতায় অধিকাংশ নিচু এলাকার গত আমন মওসুমে ধানের আবাদ হয়নি। এছাড়া চলতি মওসুমে লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে প্রায় হাজার হেক্টর কম জমিতে বোরো ধানের চাষাআবাদ হয়েছে। তা ছাড়া বোর ধান ঘরে উঠতে সময় লাগবে আরো এক থেকে দেড় মাস। এর ফলে গবাদি পশুর খাবার বিচালির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, এ উপজেলায় খামারের মাধ্যমে বহু মানুষ গরু মোটাতাজাকরণ করে থাকেন। এর বাইরেও অধিকাংশ পরিবার এক থেকে দু”টি করে গরু মোটাতাজাকরণ করে পরিবারে স্বচ্ছলতার যোগান দেয়। এর
পাশাপাশি দুধের গরুর পালনও দেখা যায়। অধিকাংশ চাষীর গরুর বিচালির যোগান মেটাতে বাড়ির আঙ্গিনায় ১/২ কাঠা জমিতে উন্নতজাতের ঘাসের প্লট রয়েছে। এতে মধ্যবিত্তরা গরু কিনে ৩/৪ মাস পালনের পর বেঁচে স্বাচ্ছন্দ্যে সংসার চালায়। কিন্তু বর্তমান গবাদি পশুর প্রধান খাবার বিচালির তীব্র সংকটসহ অন্যান্য সুষম খাদ্যের দাম বেড়ে গেছে। মঙ্গলকোট গ্রামের খামারী আব্দুল্লাহ বলেন, বিচালির অভাবে গবাদিপশু পালন করা সম্ভব হচ্ছে না। বেশী দাম দিয়ে কোন রকম বিচালি কিনে আনলেও গরুর খাদ্যাভাব মিটানো যাচ্ছে না, গরু শুকিয়ে যাচ্ছে। গরুর শুকনো বা সুষম খাবারের দামও বেড়ে গেছে। ধানের কুঁড়ো, গমের ভূষি, সরিষার খৈলের দামও রেড়েছে অস্বাভাবিক। বিচালীর পোন (২০ গোন্ডা) কিনতে হচ্ছে ৫’শ টাকায়। তাও পাওয়া যাচ্ছে না। সামনে বোরো ধান না ওঠা পর্যন্ত বিচালির দাম আর কমবে না বলে তিনি অভিযোগ করেন। পৌর এলাকার সরফাবাদ গ্রামের গরু চাষী আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, বিচালীর পোন (২০ গোন্ডা) কিনতে হচ্ছে ৫’শ টাকায়। এছাড়া ধানের কুঁড়োর কেজি ২০ টাকা, গমের ভূষির কেজি ৪৭ টাকা, সরিষার খৈল কেজি ৫০ টাকা, সয়াবিন খৈল কেজি ৬৫ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে। এ অবস্থায় বিচালির অভাবে তিনি কম দামে একটি গরু বেঁচে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রণিসম্পদ অফিসার ডা. অলোকেশ কুমার সরকার বলেন, এ উপজেলায় ২৬৯ টি গরুর খামার রয়েছে। গাভীর খামার রয়েছে ১৭১টি। মোট গরু রয়েছে ৯৪” হাজার ৫”শ ৩৪টি। বিচালি এসব গরুর প্রধান খাদ্য। খাদ্যের
চাহিদা মেটাতে জমিতে ঘাস চাষে উদ্বুদ্ধ করতে খামারীদের প্রশিক্ষণ দেয়া
হয়েছে।