বাংলাদেশের ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতি তাদের সাত দফা দাবি আদায়ের জন্য সরকারকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে। দাবি পূরণ না হলে আগামী ২৫ মার্চ থেকে ১৫ দিনের জন্য সারা দেশে ইট বিক্রি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। এতে প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিক কর্মসংস্থান হারানোর শঙ্কায় থাকবেন এবং ১৪ হাজার ইটভাটা মালিক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত ১২ মার্চ বিকেলে বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি ফিরোজ হায়দার খান এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ইটভাটা মালিকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হলে দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যাহত হবে। তাদের দাবি, ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনের অস্পষ্টতা দূর করে লাইসেন্স প্রদান ও নবায়ন প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যাংক ঋণ রয়েছে। যদি ইটভাটা বন্ধ থাকে, তাহলে এই ঋণ অনাদায়ী থেকে যাবে, যা ব্যাংক খাত ও সরকারের রাজস্ব আদায়ের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। অন্যদিকে, সরকার ও পরিবেশবিদরা ইটভাটার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। জনসাধারণের অভিযোগ, ইটভাটা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া বায়ুদূষণ বাড়িয়ে শ্বাসকষ্টসহ নানা স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করছে। এছাড়া, বৃক্ষ নিধন ও কৃষিজমির উর্বরতা হ্রাস পাওয়ার ফলে কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এ অবস্থায়, ১১ মার্চ ইটভাটা মালিক ও শ্রমিকরা ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। একই দাবিতে তারা জেলার কালেক্টরেট চত্বরে মানববন্ধনও করেছেন। সরকার যদি পরিবেশগত কারণ দেখিয়ে ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা চালিয়ে যায়, তবে এই শিল্পের ভবিষ্যৎ সংকটে পড়তে পারে। অন্যদিকে, মালিকদের দাবি মানা হলে পরিবেশগত ক্ষতি আরও বাড়তে পারে। দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা না হলে, দেশের অবকাঠামো ও পরিবেশ দুই দিকেই নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সরকার ও ইটভাটা মালিকদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান না আসলে, সামনে আরও বড় সংকট সৃষ্টি হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।