ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালকে পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে রূপান্তরিত করতে নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর মাধ্যমে হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করা হবে। সোমবার (তারিখ) থেকে শুরু হওয়া এই পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, বিডি ক্লিন ও জেলা প্রশাসন। উদ্বোধনী দিনে হাসপাতাল চত্বরে ব্যাপক পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। অভিযানে অংশ নেন ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সরদার মোস্তফা শাহিন, পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাকিবুজ্জামান, পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মজিবর রহমান, হাসপাতালের সহকারী পরিচালক জয়ন্ত কুমার সাহা এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা। জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালকে পরিচ্ছন্ন ও রোগীবান্ধব পরিবেশে গড়ে তোলাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এখানে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা যেন সুস্থ, স্বস্তিদায়ক পরিবেশে থাকতে পারেন, সেজন্য আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। তিনি আরও জানান, এটি একদিনের কর্মসূচি নয়, বরং এখন থেকে প্রতি মাসে নিয়মিতভাবে পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালিত হবে। এর ফলে হাসপাতালের পরিবেশ ধীরে ধীরে আরও উন্নত হবে। অনেকদিন ধরেই ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের পরিবেশ নিয়ে নানা অভিযোগ ছিল। রোগীদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতা রক্ষার অভাবে হাসপাতালের শৌচাগার, করিডোর ও ওয়ার্ডগুলোর অবস্থা নাজুক ছিল। তাছাড়া, বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও তেমন কার্যকর ছিল না। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক জয়ন্ত কুমার সাহা বলেন, এই ধরনের উদ্যোগ দীর্ঘমেয়াদে হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। আমরা আশা করছি, নিয়মিত অভিযানের ফলে হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা আরও উন্নত হবে এবং রোগীরা আরও ভালো সেবা পাবেন। অভিযানে অংশ নেওয়া সংগঠনগুলোর স্বেচ্ছাসেবীরা জানান, আমরা চাই, হাসপাতালের পরিবেশ শুধু পরিষ্কার থাকাই নয়, বরং রোগী ও দর্শনার্থীরা যেন পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার বিষয়ে সচেতন হন। নিয়মিত অভিযান চালানোর পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করাও আমাদের লক্ষ্য। পরিকল্পিত পদক্ষেপসমূহ, প্রতি মাসে পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা, সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করা, হাসপাতালের কর্মীদের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া, রোগী ও দর্শনার্থীদের জন্য নির্দেশনা সংবলিত বোর্ড স্থাপন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা এই উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছেন। এক রোগীর স্বজন বলেন, হাসপাতালের পরিবেশ যদি সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে, তাহলে রোগীরা আরও সুস্থ পরিবেশে চিকিৎসা নিতে পারবেন। আশা করি, এই উদ্যোগ স্থায়ী হবে। জেলা প্রশাসন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন ও রোগীবান্ধব হয়ে উঠবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী।