আপনি এখানে (থানায়) কেন আসছেন? কে আপনাকে এখানে (থানায়) আসতে বলেছে? স্ত্রীকে কু-প্রস্তাব এবং ঘরে ঢুকে ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগের অগ্রগতির বিষয়ে থানায় গেলে গাজীপুরের শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুরুজ্জামান ভুক্তভোগী নারীর স্বামী পোশাক শ্রমিক আনোয়ার হোসেনকে এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ইফতারের পর (সন্ধ্যায়) থানায় গেলে এসআই তাকে উদ্দেশ্যে করে এসব কথা বলে। এর আগে রবিবার (১৬ মার্চ) কু-প্রস্তাব এবং ঘরে ঢুকে ধর্ষন চেষ্টার ঘটনায় চালক মোমেন মিয়ার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত আভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী নারী। পরে মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুরে শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুরুজ্জামান অভিযোগকারীর বাড়ীতে গিয়ে তার সাথে কথা বলে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আসেন। অভিযুক্ত মোমেন মিয়া গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের বিধাই গ্রামের মৃত ছাত্তার ওরফে মুক্তার হোসেনের ছেলে। সে স্থানীয় ছাতির বাজার এলাকার একটি পোশাক কারখানায় গাড়ী চালক হিসেবে কর্মরত আছেন। ভুক্তভোগী নারীর স্বামী একই এলাকার পোশাক শ্রমিক আনোয়ার হোসেন বলেন, অভিযুক্ত মোমেন মিয়ার বাড়ী আমার বাড়ীর পাশপাশি। প্রায় সময় সে আমার স্ত্রীকে কু-প্রস্তাবসহ উত্যক্ত করে আসছে। তার কু-প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় সে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে আসছে। এর আগেও সে বাড়ীতে না থাকার সুযোগে চালক মোমেন মিয়া বাড়ীতে প্রবেশ করে তার স্ত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপুর্বক গায়ের উড়না খুলে ভিডিও করে। গত রবিবার (১৬ মার্চ) সকাল ৮ টায় আমি বাড়ীতে না থাকায় অভিযুক্ত আমার বসত বাড়ীতে এসে আমাকে ডাকাডাকি করতে থাকে। তখন আমার স্ত্রী ঘরের দরজা না খুললে সে ঘরের টিনের বেড়া ও দরজা ভেঙ্গে বসত ঘরে প্রবেশ করে আমার স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাতাহাতি করে। এক পর্যায়ে সে আমার স্ত্রীকে ধর্ষনের চেষ্টা করে। স্ত্রী চিৎকার দিলে মোমেন মিয়ার হাতে থাকা চাকু দিয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করে। এতে আমার স্ত্রীর বাম চোখের পাশে কাটা রক্তাক্ত জখম হয় এবং মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল, ঘুষি, ও লাথি মেরে আহত করে। যাওয়ার সময় তার সাথে শারীরিক মেলামেশা না করলে আমাকেসহ আমার স্ত্রীকে খুন সে স্ত্রীকে খুন করার হুমকি দেয়। তাছাড়াও সুযোগমতো আমার স্ত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণের পর ভিডিও করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। খবর পেয়ে আমি বাড়ীতে এসে স্ত্রীকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে চিকিৎসা দেন। আপনি মীমাংসা হবেন কিনা সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে ভুক্তভোগী বলেন, আমি মীমাংসা হবো কেনো? এটা মীমাংসা হওয়ার কি আছে? তিনি আরো অভিযোগ করেন, উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুরুজ্জামান তাকে বলেন মামলা করলে যতটুকু সমাধান হয় এই সমাধান যদি আমি দিতে পারি তাহলে আপনার হয়রানি হওয়ার দরকার নাই। সব দিক দিয়ে যদি মীমাংসা করে দিতে পারি, আপনার সমস্যা সমাধান করে দিতে পারি, আপনি যেন সঠিক বিচার পান সেই চেষ্টা আমি করতেছি। অভিযুক্ত মোমেন মিয়া বলেন, মেয়ে খারাপ, ভালো না। তার উলঙ্গ ভিডিও আছে আমার কাছে। আমার বিরুদ্ধে আনা ধর্ষন চেষ্টা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যে প্রণোদিত। তবে ওই নারীকে মারধরের কথা তিনি স্বীকার করেন। অভিযোগের বিষয়ে শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুরুজ্জামানের মুঠোফোনে কয়েকজন সাংবাদিক (২০ বারেরও) অধিক ফোন দিলেও তিনি রিসিভ না করায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।