জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, সরকার বলেছে, বিএনপি তাদের পক্ষ থেকে বলেছে, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো বলেছে, আমরা আমাদের জায়গা থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে বলেছি যে, সরকার যদি ডিসেম্বর-জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের আয়োজন করতে পারে, আমাদের এ ক্ষেত্রে কোন দ্বিমত থাকবে না। বরং ওই সময়টা (নির্বাচনের) নিদ্দিষ্ট করা হোক এবং আমরা সেটাকে সামনে রেখে সকল ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হই। আমাদের ভেতরে নির্বাচন কবে হবে সেটা নিয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ না থাকুক।
শনিবার (২২ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবে রংপুর বিভাগ রিপোর্টার্স ফোরামের (আরডিআরএফ) ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।সেনাবাহিনীকে প্রতিপক্ষ করার কোন বিষয় নেই বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর প্রধানকে সরানোর কোন প্রশ্ন কখনো আসেনি। বরং এ নিয়ে ‘গুজব ছড়ানো হচ্ছে’ হলো বলেও মন্তব্য করেন তিনি। নির্বাচনের সময় নির্দিষ্ট করার পক্ষেও মত দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির এই নেতা।সেখানে সারজিস আলমের বক্তব্যে পর সাংবাদিকদের কাছ থেকে সেনাবাহিনী নিয়ে তাদের অবস্থান প্রসঙ্গে একটি প্রশ্ন আসে। সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা একটি বিষয় স্পষ্ট করি। আমরা মনে করি যে, সেনাবাহিনী এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যে প্রতিষ্ঠানের ওপর আমাদের সবার আস্থা আছে। এ শ্রদ্ধাবোধ আমাদের সকলেরই আছে। আমরা এটা হারাতেও চাই না।’‘সেনাবাহিনী যে প্রতিষ্ঠানটি , জাতীয় নাগরিক পার্টির জায়গা থেকেও, আমি আমার ব্যক্তিগত জায়গা থেকেও যদি বলি, আমরা তাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাবোধটি ছিল এবং আমরা এটা রাখতে চাই। আমরা মনে করি, অভ্যুত্থানের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তারা যেমন বাংলাদেশের মানুষের পাশে ছিল, একই ভাবে আগামীতে তারা বাংলাদেশের মানুষের পাশে থাকবে। যে একটি ঘটনা সামগ্রিকভাবে আমরা শুনতে পাচ্ছি, আমরা মনে করি বিষয়টি অনেকটি এমন নয়। এখানে জনগণের সাথে কিংবা জাতীয় নাগরিক পার্টির সাথে কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো সঙ্গে সরাসরি সেনাবাহিনীকে প্রতিপক্ষ করার কোন বিষয় নেই। আমাদের যদি কোন একটি নিদ্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে কোন একটি প্রশ্ন থাকে, মতামত থাকে আমরা সেটি করবো। এবং যৌক্তিক আলোচনা, সমালোচনা হবে। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমরা যারা অভ্যুত্থানের শক্তি ছিলাম এ বিষয়ে আমরা কখনোই মুখোমুখি দাঁড়াবো না।’সেনাপ্রধানকে সরানোর কোন সিদ্ধান্ত আসেনি বলে উল্লেখ করেন তিনি। বিষয়টি ‘গুজব’ বলেও উল্লেখ করেন সারজিস। তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর প্রধানকে সরানো বা এমন প্রশ্ন কখনো আসে নি। কিছু গুজব ছাড়ানো হচ্ছে। যে সেনাবাহিনীর প্রধানকে অপসারণ ….। না, আমাদের জায়গা থেকে কখনো এটি বলিনি। আমরা মনে করি, এ অবস্থাও তৈরি হয়নি। এবং এ অবস্থান যাতে নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত তৈরি না হয়, সেটি আমরা প্রত্যাশা করি। সেনাবাহিনীর সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর যে শ্রদ্ধার জায়গা, আমরা মনে করি সব সময়ে ছিল, আছে এবং আগামীতেও থাকবে।’নির্বাচন নিয়ে সারজিস আলম বলেন, সরকার বলেছে, বিএনপি তাদের পক্ষ থেকে বলেছে, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো বলেছে, আমরা আমাদের জায়গা থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে বলেছি যে, সরকার যদি ডিসেম্বর-জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের আয়োজন করতে পারে, আমাদের এ ক্ষেত্রে কোন দ্বিমত থাকবে না। বরং ওই সময়টা (নির্বাচনের) নিদ্দিষ্ট করা হোক এবং আমরা সেটাকে সামনে রেখে সকল ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হই। আমাদের ভেতরে নির্বাচন কবে হবে সেটা নিয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ না থাকুক। এবং সেটাকে সামনে রেখে আমরা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগসহ সকল ধরনের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে কাজ করি।’‘মব জাস্টিস’ কখনোই কাম্য নয় উল্লেখ করেন সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘মব জাস্টিস আমাদের আকাঙ্ক্ষিত যে চাওয়া সেটির দিকে নিয়ে যেতে পারে না। কারণ দিন শেষে আমরা সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থা চাই।’
ইফতার মাহফিলে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। এ সময় সংগঠনটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।