ইকবাল আহমেদ ওবিই ডিবিএ এনআরবি ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। রবিবার অনুষ্ঠিত ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় তাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়েছে। ইকবাল আহমেদ এনআরবি ব্যাংক পিএলসির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়াও তিনি সীমার্ক গ্রুপ অব কোম্পানিজ এবং আইবিসিও ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী। সিলেটের বাসিন্দা ইকবাল একজন প্রথিতযশা-অভিজ্ঞ ব্যবসায়ী। বিশ্বজুড়ে তিনি সততা সুনাম এবং সফলতার সাথে তার ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে বাংলাদেশের নাম বিশ্ব দরবারে উজ্জ্বল করেছেন। একটি ছোট পারিবারিক ব্যবসা থেকে সীমার্ক গ্রুপ আজ বিশ্বব্যাপী হিমায়িত সামুদ্রিক খাবার এবং বিভিন্ন খাদ্যপণ্য সরবরাহ করে। ১৯৭৬ সালে ইকবাল ব্রাদার্স অ্যান্ড কোম্পানি (বর্তমানে আইবিসিও লিমিটেড) তৈরি করেন, যা হিমায়িত সামুদ্রিক খাবার এবং সকল ধরনের হিমায়িত খাদ্যপণ্য আমদানি ও বিতরণ করে এবং যুক্তরাজ্য এবং ইইউতে ব্ল্যাক টাইগার চিংড়ি আমদানিকারী প্রথম ব্যক্তি ছিলেন। ব্যবসার প্রতি তার সততা এবং স্পষ্ট নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশে সীমার্ক একাধিক মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার পেয়েছে। ২০০১ সালে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে তার অবদানের জন্য বৃটেনের রানির সর্বোচ্চ সম্মাননা স্বীকৃতি ওবিই (অফিসার অব দ্য মোস্ট এক্সিলেন্ট অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার) অর্জন করেন। এছাড়াও ২০০২ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে প্রায় প্রতি বছর তিনি বাংলাদেশে একজন শ্রেষ্ঠ রপ্তানিকারক হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে সিআইপি (বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) সম্মাননা পদক অর্জন করেছেন।
ইকবাল আহমেদের সবচেয়ে বড় অর্জনগুলোর মধ্যে একটি হলো বাংলাদেশে এনআরবি ব্যাংক পিএলসির সফল প্রতিষ্ঠা, যেখানে তিনি বিশ্বজুড়ে ৪৬ জন অনাবাসী বাংলাদেশিকে উদ্যোক্তা বিনিয়োগকারীকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য একত্রিত করেছিলেন। তার স্বপ্ন ছিল অনাবাসী বাংলাদেশিদের জন্য একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান তৈরি করা। তিনি এনআরবি-দের জন্য দেশে বিনিয়োগের সুবিধা প্রদান, বাংলাদেশি উদ্যোগগুলোকে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশাধিকার প্রদান এবং বৈদেশিক রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি করে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। ইকবাল তার ব্যস্ত কর্মসূচির মধ্যেও দাতব্য কাজের জন্য সময় বের করেন। তিনি যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশের অনেক দাতব্য সংস্থার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত যার মধ্যে রয়েছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা, পুনর্বাসন, প্রশিক্ষণ। এর মধ্যে রয়েছে সিলেটের ১৪০০ শিক্ষার্থীর জন্য বুরুঙ্গা ইকবাল আহমেদ হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের উন্নয়ন। ম্যানচেস্টার চিলড্রেনস হসপিটাল আপিল, রয়েল ম্যানচেস্টার আই হসপিটাল আপিল এবং আহসানিয়া মিশন ক্যানসার অ্যান্ড জেনারেল হসপিটাল নির্মাণের জন্য তহবিল সংগ্রহ এবং সহায়তা করেছেন। তিনি ইউকেবিসিসিআই-এর চেয়ারম্যান, যা যুক্তরাজ্য এবং বাংলাদেশের তরুণদের ব্যবসা এবং উদ্যোক্তা হিসেবে উৎসাহিত করে। তিনি ব্যক্তিগতভাবে তার কোম্পানির সিএসআরএর সাথে জড়িত এবং যুক্তরাজ্যে নিবন্ধিত একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান গঠন করেছেন যার নাম ইকবাল ব্রোস ফাউন্ডেশন, যা বর্তমানে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য তহবিল সংগ্রহ করছে।