নিজস্ব প্রতিবেদক
নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, ‘আগামী দু’একদিনের মধ্যে পদ্মায় ডুবে যাওয়া লঞ্চ পিনাক-৬ এর তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।’
প্রতিবেদনটি ২/৩দিন আগে মন্ত্রণালয়ে জমা পড়েছে বলেও জানান তিনি।
মঙ্গলবার দুপুরে সোমালিয়ায় জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সাত নাবিককে ৩৫ লাখ টাকা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
দুর্ঘটনা কবলিত পিনাক লঞ্চ-৬ উদ্ধার সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘উদ্ধার করতে না পারা আমাদের বা প্রশাসনের কোনো ব্যর্থতা নয়। শুধু প্রকৃতির কারণে পিনাক-৬ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।’
উদ্ধার করতে যেসব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে তা এ সরকারের আমলেই আনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ৪ মে বেলা ১১টায় মাদারীপুরের কাওড়াকান্দি ঘাট থেকে মাওয়ার উদ্দেশে ছেড়ে আসা এমএল পিনাক-৬ মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার মাওয়াঘাটের কাছে পদ্মা নদীতে ডুবে যায়। মাত্র ৮৫ জন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন লঞ্চটিতে আনুমানিক আড়াই শ’ যাত্রী ছিল।
মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় মাত্র ৫২ সেকেন্ডে লঞ্চটি তলিয়ে যায়।
ওই দুর্ঘটনায় ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হলেও সরকারি হিসেবে নিখোঁজের সংখ্যা ৬০ জন। তবে, ওই লঞ্চের যাত্রীদের স্বজনেরা দাবি করেছেন, অন্তত ১২৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
সাত দিন চেষ্টা চালিয়েও নদীর তলদেশে লঞ্চটির অবস্থান সনাক্ত করতে না পেরে উদ্ধার অভিযান পরিত্যক্ত ঘোষণা করে বিআইডব্লিউটিএ ও মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসন।
দুর্ঘটনার পরপরই নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নুর-উর রহমানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রণালয়। একই দিন অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল অধ্যাদেশ (আইএসও)-১৯৭৬ অনুযায়ী, সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের পরীক্ষক ড. এএসএম নাজমুল হকের নেতৃত্বে চার সদস্যবিশিষ্ট পৃথক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে অধিদপ্তর। তবে, চারদিন পর অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এই কমিটি বিলুপ্ত করেন।
মন্ত্রণালয়ের কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের চিফ নটিক্যাল সার্ভেয়ার ক্যাপ্টেন কে এম জসিমউদ্দীন সরকার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সাইফুল হাসান, বিআইডব্লিউটিএর সদস্য (প্রকৌশল) ফিরোজ আহমেদ, বিআইডব্লিউটিসির প্রধান প্রকৌশলী আব্দুর রহিম, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নৌযান ও নৌযন্ত্র কৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গৌতম কুমার সাহা এবং মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট।
কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার কথা বলা হলেও তিন দফা সময় বাড়িয়ে অবশেষে নৌ মন্ত্রণালয়ে এই প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়।