নিজস্ব প্রতিবেদক :
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে সরকারের সাজানো, মিথ্যা মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদানের প্রতিবাদে এবং এই মুহূর্তে তার মুক্তির দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বৃহস্পতিবার থেকে ৪৮ ঘণ্টা হরতাল ডেকেছে। তবে আগামী বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা এবং রোববার ভোর ৬টা থেকে সোমবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার হরতাল ঘোষণা করা হয়েছে।
এছাড়া শুক্রবার সরকারের জুলুম থেকে পরিত্রাণের জন্য দেশে-বিদেশে সাঈদীর জন্য দোয়া অনুষ্ঠান এবং শনিবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ ও ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান এক যুক্ত বিবৃতি এ তথ্য জানান।
বিবৃতে মকবুল আহমাদ ও শফিকুর রহমান বলেন, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী একজন আলেমে দ্বীন, বিশ্ববরেণ্য মোফাসসিরে কুরআন। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অগণিত মানুষের হৃদয়ে তার স্থান। বিগত প্রায় অর্ধশতাব্দী কাল ধরে তিনি দেশে-বিদেশে মহাগ্রন্থ আল কুরআনের তাফসীর পেশ করে আসছেন। ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত তার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল না। সরকার এ মামলায় তাকে ফাঁসানোর জন্য নানান ষড়যন্ত্রে মেতে উঠে। ধান চোর, কলা চোর, ট্রলার চোর, যৌতুক আইনে দণ্ডপ্রাপ্ত ও বিভিন্নভাবে সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণকারী ব্যক্তিদের সাক্ষী হিসেবে আদালতে উপস্থাপন করে সরকার। ১৬ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির না করে তাদের জবানবন্দীকে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়। যা বিচার বিভাগের ইতিহাসে এক নজিরবিহীন ঘটনা।
সরকার পক্ষের সাক্ষীদের সেইফ হাউসে রেখে মিথ্যা সাক্ষী দিতে বাধ্য করা হয়। সাঈদীর বক্তব্য না শুনেই তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার শুনানী অন্যায়ভাবে সমাপ্ত করা হয়। সরকার ইচ্ছা মাফিক সাক্ষী প্রদান করলেও সাঈদীর পক্ষের সাক্ষীর সংখ্যা সীমিত করা হয়। দেলু শিকদার নামক কুখ্যাত রাজাকারের অপকর্মের দায় সাঈদীর উপর চাপানো হয়। সাঈদীর পক্ষের সাক্ষীকে ট্রাইব্যুনালের গেট থেকে অপহরণ করে ভারতে পাচার করা হয়।
উল্লেখ্য, বুধবার মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ট্রাইব্যুনালের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ১০, ১৬ ও ১৯ নম্বর অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ৭ নম্বর অভিযোগের ভিত্তিতে ১০ বছর এবং ৮ নম্বর অভিযোগের ভিত্তিতে ১২ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়।