নিজস্ব প্রতিবেদক
দুই দিনের টানা হরতালের কারণে ঝাল বেড়েছে মরিচের দামে। গতকাল রোববার যেখানে প্রতিকেজি মরিচের দাম ছিল ৬০ টাকা, সোমবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০ টাকা।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারে গিয়ে মরিচের দামের এ হাল দেখা যায়। দাম শুনে রেগেমেগে আগুন ক্রেতারা। একদিনের ব্যবধানে কাঁচা মরিচসহ অন্য সবজির দামও বৃদ্ধি পাওয়ায় পকেটের সব টাকা খরচ করেও ব্যাগ ভর্তি বাজার নিয়ে ফিরতে পারছেন না কেউ।
বাজার করতে আসা মুস্তাক আহমেদের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে এভাবে দাম বাড়লে আমরা কীভাবে খেয়ে পরে বাঁচবো। একদিনের ব্যবধানে মরিচের দাম অনেক বেড়ে গেছে। প্রতিকেজি মরিচ ৮০ টাকা ৯০ টাকা করে নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। শুধু মরিচই নয় অন্যান্য পণ্যেরও দাম ৫-৭ টাকা করে বেড়েছে।’
দাম বাড়ার ব্যাপারে সবজি ব্যবসায়ী আবুল ভাসান বলেন, ‘হরতালের কারণে বাজারে মালের আমদানি কমে গেছে। তারপর আবার বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি ভিজে সব মাল পচে যাচ্ছে। হরতাল আর বৃষ্টির কারণে বাজারে কাস্টমার নাই। হরতালে আগুন লাগায়, গাড়ি ভাঙে তাই মাল নিয়ে গাড়ি আসতে চায় না। তাদের লাখ লাখ টাকা দামের গাড়ি। বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়া দিয়ে মাল আনতে হয়। আমাদের ব্যবসায় লোকসান হয়। কী করবো, বাধ্য হয়ে সবাই বাড়তি দামে মাল বেচতেছে।’
সোমবার প্রতিকেজি মরিচের দাম ৮০ টাকা। দেশি পিঁয়াজ প্রতিকেজি ৪০ টাকা এবং ভারতীয় পিঁয়াজ ৩৫ টাকা। আলু প্রতিকেজি ২৫ টাকা বলে জানান আবুল ভাসান।
এছাড়া কেজিপ্রতি শসার দাম ৪০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা। বেড়েছে মিষ্টিকুমড়া, লাউ, ফুলকপি ও বাঁধাকপির দামও।
আবুল ভাসান বলেন, ‘গতকাল আমরা ৮০০ টাকা মণ দরে লাউ কিনেছিলাম। কিন্তু আজকে কিনতে হয়েছে ১২০০ টাকা দরে। আবার গতকাল এক একটা মিষ্টিকুমড়ার দাম ছিল ১৮০ টাকা। আজ ২০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম প্রতিটা ৩০ টাকা।’
কাঁচা সবজির দাম বাড়লেও কমেছে মাছের দাম। প্রতিকেজি রুই মাছের দাম ১৮০ টাকা, ইলিশ প্রতিপিস মাঝারি সাইজের ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। বড় আকারের বাগদা চিংড়ি ৯০০ টাকা কেজি, মাঝারি চিংড়ি ৮০০ টাকা এবং ছোট চিংড়ি ৬০০ টাকা প্রতিকেজি।
মাছ বিক্রেতা শমসের হাওলাদার বলেন, ‘হরতালে জন্যে বাজারে মাছের আমদানিও নাই, আবার কাস্টমারও নাই। বেচাকেনা ভালো না। বাজারে দাম নাই। গতকালের চেয়ে আজকে মাছের দাম অনেক কম।’
তবে হরতালের কারণে মাংস বাজারে তেমন প্রভাব পড়েনি। গরুর মাংস প্রতিকেজি ৩০০ টাকা। আর খাসী ৪৮০ টাকা কেজি, ছাগল ৪০০ টাকা কেজি।
মাংস বিক্রেতা মোতালিব বলেন, ‘কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে মাংসের বাজার বেশকিছু দিন ধরেই একটু বাড়তি যাচ্ছে। বাজারে গবাদি পশুর দাম এখন বেশি।’