ঢাকাবুধবার , ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি ও অন্যান্য
  5. খেলাধুলা
  6. গল্প ও কবিতা
  7. জাতীয়
  8. তথ্যপ্রযুক্তি
  9. দেশজুড়ে
  10. ধর্ম ও জীবন
  11. প্রবাস
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. বিশেষ প্রতিবেদন
  15. মুক্তমত
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কোরবানির হাট
তৃতীয় দফায়ও কাঙ্ক্ষিত দর পায়নি ডিএসসিসি

দৈনিক পাঞ্জেরী
সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৪ ৬:৩৭ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুই দফা শেষে তৃতীয় দফায়ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন অস্থায়ী কোরবানি হাটগুলোর মধ্যে চারটি হাটে কাঙ্ক্ষিত দর পায়নি ডিএসসিসি। বারবার দরপত্র আহ্বানের পরও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি।
প্রথম দুই দফায় কাঙ্ক্ষিত দর না পাওয়ায় পুনঃদরপত্র আহ্বান করা কোরবানি পশুর অস্থায়ী হাটগুলো হচ্ছে- লালবাগ হাজী দেলোয়ার হোসেন খেলার মাঠ ও বাঁধ সংলগ্ন খালি জায়গায়, ঝিগাতলা হাজারীবাগ মাঠ, কামরাঙ্গীরচর ইসলাম চেয়ারম্যানের বাড়ির মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধসংলগ্ন নতুন হাট এবং গোলাপবাগ মাঠের পাশের সিটি করপোরেশনের আদর্শ স্কুল মাঠ ও পাশের খালি জায়গার হাট।
লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হলেও এ চারটি হাট সরকারি দলের লোকদের কম মূল্যেই ইজারা দেয়া হচ্ছে। এতে গত বছরের তুলনায় শুধু এ চারটি হাট থেকেই ৩ কোটি ৫৭ লাখ ৫৬ হাজার ৫২৭ টাকার রাজস্ব হারাতে বসেছে ডিএসসিসি।
লালবাগ হাজী দেলোয়ার হোসেন খেলার মাঠ ও বাঁধ সংলগ্ন খালি জায়গায় হাটের দর গত বছর ছিল ৪ কোটি ১ লাখ ১১ হাজার ৫০৭ টাকা।51এ বছর প্রথম দফায় এ হাটের সর্বোচ্চ দরদাতা ছিলেন শেখ মোহাম্মদ আলমগীর। তিনি এর দর প্রস্তাব করেছিলেন ১ কোটি ১ লাখ ১ হাজার ১০০ টাকা। দ্বিতীয় দফায় সর্বোচ্চ দরদাতা একই ব্যক্তি দর প্রস্তাব করেছিলেন ১ কোটি ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। তৃতীয় দফায়ও সর্বোচ্চ দর ১ কোটি ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দর দিলেন ওই একই ব্যক্তি। যা গত বছরের তুলনায় ২ কোটি ৯৬ লাখ ৩৬ হাজার ৫০৭ টাকা কম।
ঝিগাতলা হাজারীবাগ মাঠের গত বছর সর্বোচ্চ দর ছিল ৫৫ লাখ ৩৪ হাজার ২০ টাকা। এ বছর প্রথম দফায় সর্বোচ্চ দরদাতা যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ মাসুদ রানা। তিনি দর দিয়েছিলেন ১১ লাখ ১১ হাজার ১০ টাকা। দ্বিতীয় দফায় সর্বোচ্চ দরদাতা ১২ লাখ টাকা। তৃতীয় দফায় সর্বোচ্চ দরদাতা জাহিদুল ইসলাম রাজীব। তিনি দর দিলেন ২০ লাখ ১ হাজার টাকা। যা গত বছরের তুলনায় ৩৫ লাখ ৩৩ হাজার ২০ টাকা কম।
গোলাপবাগ মাঠের পাশের সিটি করপোরেশনের আদর্শ স্কুল মাঠ ও পাশের খালি জায়গার হাটের গত বছর সর্বোচ্চ দর ছিল ৬১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। এ বছর প্রথম দফায় সর্বোচ্চ ১০ লাখ ১০ হাজার টাকা দর প্রস্তাব করেছিলেন মোহাম্মদ হামিদুল। দ্বিতীয় দফায় সর্বোচ্চ দর প্রস্তাব করেছেন একই ব্যক্তি। ১১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। তৃতীয় দফায় ৩৫ লাখ ৯৭ হাজার টাকা সর্বোচ্চ দর প্রস্তাবকারী একই ব্যক্তি । যা গত বছরের তুলনায় ২৫ লাখ ৮৭ হাজার টাকা কম।
কামরাঙ্গীরচর ইসলাম চেয়ারম্যানের বাড়ির মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধসংলগ্ন নতুন হাটটির প্রথম দফায় সবোর্চ্চ দরদাতা হাজী মোহাম্মদ আবুল হোসেন সরকার দর প্রস্তাব করেছিলেন ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। দ্বিতীয় দফায় সর্বোচ্চ ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা প্রস্তাব করেন একই ব্যক্তি। আর তৃতীয় দফায় ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা সর্বোচ্চ দর প্রস্তাবক একই ব্যক্তি।
অভিযোগ আছে, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সিন্ডিকেটের কারণে অস্থায়ী পশুরহাটের কাঙ্ক্ষিত ইজারামূল্য পায়নি সিটি করপোরেশন। এতে নির্বিঘ্নে টেন্ডার প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করতে পারেনি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। দুই সিটি করপোরেশনেই হাটের ইজারামূল্য সন্তোষজনক না হওয়ায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা টেন্ডার আহ্বান করতে হয়। দুই করপোরেশনের দু’একটি হাট ছাড়া বেশিরভাগ হাটের ইজারামূল্য বাড়েনি। বরং অনেক ক্ষেত্রে কমেছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, টেন্ডার সিডিউল ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা কোরবানির হাটের টেন্ডার বাক্স পাহারা দিয়ে রাখে। তারা নিজেদের মধ্যে হাটের দরপত্র ভাগাভাগি করার কারণে বাইরের কেউ বেশি মূল্য দিতে রাজি থাকলেও তাদের টেন্ডার ড্রপ করতে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
ফলে সিন্ডিকেটের বাইরে কারও পক্ষে সিডিউল সংগ্রহ ও জমা দেয়া সম্ভব হয়নি। ডিএসসিসির অস্থায়ী গরুর হাটগুলোর ইজারা ক্ষমতাসীনদের আয়ত্বে রাখতে নেয়া হয় নানা কৌশল। একই ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন নামে-বেনামে নাম মাত্র মূল্য দিয়ে দরপত্র জমা দেয়। যে কারণে নিজেদের কাঙ্ক্ষিত দামে ইজারা পেতে সহজ হয়ে যায়। এতে সিটি করপোরেশন কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাতে বসেছে।
ডিসিসি আইনে গত তিন বছরের গড় মূল্যের চেয়ে কম দরে কোরবানির পশুরহাট ইজারা দেয়ায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী এ হাটগুলোর পুনঃদরপত্র আহ্বান করা হয়। কিন্তু টানা তিনবার পুনঃদরপত্র আহ্বানের পরও খুব বেশি দর বাড়েনি সংশ্লিষ্ট হাট তিনটির।
অভিযোগ রয়েছে, মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেনের মাধ্যমে ডিএসসিসির কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এবং ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে সরকার দলীয় সংঘবদ্ধ ইজারাদাররা হাটগুলোতে সাধারণ দরদাতাদের দরপত্রে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখে। এ কারণে হাটগুলোর কাঙ্ক্ষিত দর ওঠেনি।
এ ব্যাপারে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা খালিদ আহমেদ বলেন, ‘এ চারটি হাট ছাড়া বাকি সব হাটেই আগের চেয়ে লাভবান হয়েছে। একাধিকবার দরপত্র আহ্বানের পরও এ হাটগুলোর কাঙ্ক্ষিত দর না উঠায় আমরা পরবর্তী মিটিংয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’