লাইফস্টাইল ডেস্ক
ছোটবেলা থেকেই নিজেকে সাজাতে পছন্দ করতেন। এরপর যখন বড় হতে লাগলেন নিজেকে সাজানোর পাশাপাশি আশেপাশের মেয়ে বাচ্চাদের সাজাতেন। সাজের প্রতি ছিল প্রবল ঝোক। আর সেই ঝোক থেকেই গড়ে তোলেন গ্লোরিয়াস বিউটি কেয়ার অ্যান্ড স্পা। ছোট পরিসরে শুরু করলেও নিজের মেধা ও শ্রম দিয়ে সফলতার শীর্ষে পৌছে যাওয়া সেই নারী হচ্ছেন শান্তনা রহমান। বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় স্কিন অ্যান্ড হেয়ার এক্সপার্টদের মধ্যে তিনি অন্যতম।
ছোটবেলায় ব্যাংকার হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও সাজের প্রতি ভালোবাসা থেকে ২০০১ সালে এসএসসি পরীক্ষার পর পার্লারের কাজ শেখেন। পরের বছর জুরাইনে মাত্র দুজন বিউটিশিয়ান নিয়ে নিজেই পার্লার দেন। পরবর্তীতে ২০জন মেয়ে বিউটিশিয়ান নিয়ে ওয়ারিতে বৃহৎ পরিসরে গড়ে তোলেন গ্লোরিয়াস বিউটি কেয়ার অ্যান্ড স্পা। গ্লোরিয়াসে সব বয়সী ও সব শ্রেণির নারীদের সৌন্দর্য সেবা দেওয়া হয়। মুখে ব্রণ, মেসতা, চুল পরা, দাগ, চামড়ায় ভাঁজ পরা ইত্যাদি সমস্যা সমাধানের জন্য প্রতিদিন প্রায় একশ নারী এখানে আসেন।
ব্যক্তি উদ্যোগে সৌন্দর্য বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষার জন্য দেশের বাইরে ভারত, সিংগাপুর, মালয়েশিয়া, নেপাল ও স্পেনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সৌন্দর্য বিষয়ে ট্রেনিং নেন।
শান্তনা রহমানের শুরুটা কিন্তু মোটেও সুখকর ছিল না। শুরুতে অনেক বাধা এসেছে। আত্মীয়-স্বজন কেউ চান নি পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি এই পেশায় আসুক। মা আফরোজা রহমানের অনুপ্রেরনায় তাকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। বিয়ের পর স্বামীও তাকে সহযোগিতা করেন। স্বাধীন পেশা হওয়ায় তিনি যতটুকু সময় পান একমাত্র মেয়ে তোয়া আফরোজকে নিয়ে সময় কাটান। এছাড়া অবসর সময়ে কবিতা লেখেন, গান গাইতে ও নাচতে পছন্দ করেন।
ভবিষ্যতের কথা বলতে গিয়ে শান্তনা জানান, ‘দেশের প্রতিটি শহরে-গ্রামে একটি করে শাখা করতে চাই যেন সবাই গ্লোরিয়াসের সেবা নিতে পারে। একটি ইনস্টিটিউট গড়ে তুলতে চাই, যেখানে স্বল্প প্রশিক্ষিত মেয়েদের যারা পার্লার খুলেছে তারা যেন প্রশিক্ষণ নিয়ে মানসম্মত সেবা দিতে পারে। আমি সব সময় ব্যবসা নয়, সেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করার চেষ্ট করছি। আর এভাবেই কাজ করে যেতে চাই সারা জীবন।’
তরুনদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘ধৈর্য্য, ইচ্ছা ও একাগ্রতার সঙ্গে সেবা দেয়ার মানসিকতা থাকলে যে কেউ এই পেশায় ভালো করতে পারবে।’
সাজানো শেষে নিজেকে দেখে ক্লায়েন্ট যখন মিষ্টি হাসি দেয়। এই হাসিটাই তার সবচেয়ে বড় পাওয়া বলে মনে করেন শান্তনা রহমান।