
নিউইয়র্ক :
মধ্যবর্তী নির্বাচনের কোনো সম্ভাবনা নেই জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশে মধ্যবর্তী নির্বাচন দেয়ার প্রশ্নই আসে না। কার জন্য, কীসের জন্য এবং কেন মধ্যবর্তী নির্বাচন দেব? জিয়াউর রহমানের দল বিএনপিকে আবার ক্ষমতায় আনার জন্য কী মধ্যবর্তী নির্বাচন দেব। গত ৫ জানুয়ারি নির্বাচন তো হয়েই গেছে। নির্বাচনে অংশ নেয়া, ভোট দেয়া সকলের গণতান্ত্রিক অধিকার। যারা নির্বাচনে আসেনি, তারা গণতন্ত্রকে অসম্মান করেছে। তাদের জন্য আমি কী করতে পারি?’
২৬ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬ টায় নিউইয়র্কে জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি তো সংসদীয় রীতি অনুযায়ী এখন আর বিরোধী দলও নয়। বিরোধী দল তো জাতীয় পার্টি। তবে কেন বিএনপির সঙ্গে সংলাপ হবে?’
‘প্রধামন্ত্রী দেশ ছেড়ে পালাবেন’ বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার এমন মন্তব্যের কথা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার মাটিতে জন্ম নিয়েছি। আমি ভারতের শিলিগুঁড়িতে জন্ম নেইনি। উনি (খালেদা জিয়া) শিলিগুঁড়ির চা বাগানে জন্ম নিয়েছেন। আমি বাংলার মাটিতেই থাকবো। আমার কোনো ভিসা নিতে হবে না। ভিসা লাগলে তার লাগবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি কিন্তু ওয়ান-ইলেভেন পরবর্তী সরকারের সময়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দেশে ফিরেছিলাম। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমি দেশে ফিরেছি। আমার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে শতাধিক রাজনৈতিক নেতাকর্মী দেশে ফিরেছিলেন। ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দীন সরকার আমাকে আটকাতে পারেনি।’
জামায়াত ইসলামী নিষিদ্ধ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জামায়াতকে রাজনীতিতে এনেছেন জিয়াউর রহমান।’
জামায়াত নেতা সাঈদীর রায় প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এটি আদালাতের ব্যাপার। বিচার বিভাগ স্বাধীন। আমরা আদালতের রায়ে হস্তক্ষেপ করতে পারি না।’
তিনি সরকারি দলের সঙ্গে জামায়াতের আঁতাতের কথা নাকচ করে দেন। বাংলাদেশে দুর্নীতি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতি দমনে সরকার সচেষ্ট। দুর্নীতি হলে এতো উন্নয়ন হতো না। পদ্ম সেতু নিয়ে দুর্নীতির অনেক কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ এর প্রমাণ করতে পারেনি।’
শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তার সরকারের সাফল্যের এবং জাতিসংঘে তার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন। আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধির কথাও তিনি বলেন।
তিনি দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে তার সরকারের সফলতা প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা ব্যবসা করতে আসিনি, সেবা করতে এসেছি।’
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহারিয়ার আলম ও স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ.কে. আব্দুল মোমেন।