গাজীপুর প্রতিনিধি : স্কুলের শিক্ষার্থীদের খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করা হচ্ছে এমন গুজবে গাজীপুর মহানগরের আমবাগ এলাকায় খ্রিস্টান মিশন পরিচালিত একটি স্কুলে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে স্কুলটির শিক্ষকসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পাঁচ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার সকাল ১০ টার দিকে খ্রিস্টান মিশন পরিচালিত স্টিভ কিম মিশন বিদ্যালয়ে এ হামলা চালানো হয়।
আটকরা হলেন- রহমান কালু (৪০), বাবু মিয়া (২৪), আল আমিন (১৮), ফারুক হোসেন (৪২) ও আমজাদ হোসেন (৩৭)।
স্থানীয় ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য আমবাগ এলাকায় খ্রিস্টানদের লাভ বাংলাদেশ মিশনের ‘স্টিভ কিম মিশন স্কুল, নামের ওই বিদ্যালয়টির কার্যক্রম গত এপ্রিল মাসে শুরু হয়। সেখানে প্লে গ্রুপ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। শিক্ষার্থীদের বই, খাতা, কলম বিনামূল্যে দেয়া হয়। এমনকি তাদের জন্য দুপুরে নাস্তার ব্যবস্থাও করে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
এসব সুবিধা পেয়ে আশপাশের কয়েকটি কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীরা ওই বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ছুঁটে যাচ্ছে। অল্প সময়ে বিদ্যালয়টি বেশ সুনাম অর্জন করে। এলাকার অন্য কিন্ডারগার্টেনের সঙ্গে জড়িত কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি এলাকায় গুজব জড়িয়ে দেয়, সেখানে শিক্ষার্থীদের ইসলাম ধর্ম বাদ দিয়ে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করতে বাধ্য করা হচ্ছে।
এমন গুজবের জের ধরে বুধবার সকাল ১০ টার দিকে স্কুল চলাকালীন সময় ৪০-৪৫ জন দুর্বৃত্ত লাঠিসোটা নিয়ে বিদ্যালয়ে হামলা চালায়। হামলাকারীরা শিক্ষকদের মারধোর করে এবং বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। হামলায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে সহকারী শিক্ষক সুশীল মন্ডল, বিস্টু মন্ডল, নারায়ন মন্ডল, জন স্যার, শিউলি হাওলাদার ও সুমীত্রাকে স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
খবর পেয়ে জয়দেবপুর থানা পুলিশ সেখানে পৌঁছালে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রহমান কালু, বাবু মিয়া, আল আমিন, ফারুক হোসেনও আমজাদ হোসেনকে আটক করে।
বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাইকেল মন্ডল জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ওই দুর্বৃত্তরা আমাদের স্কুলে হামলা চালিয়ে মারধর করেছে। স্থানীয় একটি মহল এতে ঈর্ষান্বিত হয়ে ধর্মান্তরের গুজব ছড়িয়ে ভাংচুর ও শিক্ষকদের মারধোর করেছে। স্কুলের কোনো শিক্ষার্থীকে ধর্মান্তরিত করা হয়না। এটা গুজব ছাড়া আর কিছু নয়।
এ বিষয়ে কোনাবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ আজহারুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রহমান কালু, বাবু মিয়া, আল আমিন, ফারুক হোসেন ও আমজাদ হোসেনকে আটক করা হয়েছে।’