নিজস্ব প্রতিবেদক :
এবিএম আলতাফ হোসেনকে হাইকোর্টে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া যায় কি-না সে বিষয়ে পরামর্শ দিতে ৭ অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা হলেন- ব্যারিস্টার রফিকুল হক, ড. কামাল হোসেন, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এএফ হাসান আরিফ, মাহমুদুল ইসলাম, আজমালুল হুদা কিউসি, ওয়াদুদ হোসেন ভূঁইয়া প্রমুখ।
স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ চেয়ে এবিএম আলতাফ হোসেনের দায়ের করা রিট খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টের আপিল করা হয়। বৃহস্পতিবার সেই আপিল শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন আট সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগের আদেশ দেন।
আদালতে আলতাফ হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৬ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।
এবিএম আলতাফ হোসেন হাইকোর্টে অস্থায়ী বিচারপতি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু সরকার তাকে বিচারপতি হিসেবে স্থায়ী না করায় এ বছর তার অস্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ বাতিল হয়ে যায়। এ বিষয়ে তিনি হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। হাইকোর্ট শুনানি শেষে তা খারিজ করে দেন। এই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন আলতাফ হোসেন।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১৩ জুন ছয়জনকে দু’বছরের জন্য অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। দু’বছর পর গত ৯ জুন অতিরিক্ত বিচারপতি এবিএম আলতাফ হোসেন ছাড়া পাঁচজনকে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এরপর স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেতে হাইকোর্টের নির্দেশনা চেয়ে গত ১২ আগস্ট রিট আবেদন করেন এবিএম আলতাফ হোসেন।
এবিএম আলতাফ হোসেনকে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগদানের নির্দেশনা চেয়ে গত ২৩ জুলাই আরেকটি রিট দায়ের করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ ইদ্রিসুর রহমান।
এর আগে গত ৬ জুলাই ইদ্রিসুর রহমান একই উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের সচিব, আইন সচিব এবং সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারকে আইনি নোটিশ পাঠান। নোটিশ অনুসারে ব্যবস্থা না নেয়ায় তিনি রিট করেন।
রিটে বলা হয়, আকর্ষণীয় শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি পেশাগত জীবনে আইনজীবী ও বিচারপতি হিসেবে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন এবিএম আলতাফ হোসেন। দ্বৈত বেঞ্চের বিচারপতি হিসেবে তাদের দেয়া অনেক রায় ডিএলআর ও বিএলসিতেও স্থান পেয়েছে উল্লেখ করে এতে বলা হয়, অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে দুই বছর মেয়াদ শেষের আগে প্রধান বিচারপতি অন্য বিচারপতিদের মতো তারও ১০টি রায় পর্যালোচনা করেছিলেন। সবার কাজে সন্তুষ্ট হয়ে তাদের নিয়োগ দিতে প্রধান বিচারপতি সুপারিশ করলেও কোনো কারণ উল্লেখ না করেই রাষ্ট্রপতি তাকে বাদ দিয়ে বাকি পাঁচজনকে নিয়োগ দেন বলে রিটে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্তদের চারদলীয় জোট সরকার স্থায়ী নিয়োগ দেয়নি। ইদ্রিসুর রহমান আদালতে মামলা করলে রায়ে ১০ বিচারপতি হাইকোর্টে স্থায়ী হিসেবে নিয়োগ পান। তবে তারা জ্যেষ্ঠতা পাননি। পরে তাদের সঙ্গে বাদপড়া আরো একজন স্থায়ী হিসেবে নিয়োগ পান।