ঢাকাশনিবার , ৮ নভেম্বর ২০১৪
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি ও অন্যান্য
  5. খেলাধুলা
  6. গল্প ও কবিতা
  7. জাতীয়
  8. তথ্যপ্রযুক্তি
  9. দেশজুড়ে
  10. ধর্ম ও জীবন
  11. প্রবাস
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. বিশেষ প্রতিবেদন
  15. মুক্তমত
আজকের সর্বশেষ সবখবর

হরতালে দিনপ্রতি ক্ষতি ১৬০০ কোটি টাকা

দৈনিক পাঞ্জেরী
নভেম্বর ৮, ২০১৪ ১১:৫২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

Hartalনিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ডাকা হরতাল কর্মসূচি জনজীবনে দুর্ভোগ তৈরি করা ছাড়াও অর্থনীতিতে হানছে চরম আঘাত। প্রতিটি হরতালে দেশের অর্থনীতি ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে, ব্যবসা বাণিজ্যে ক্ষতি হচ্ছে শত শত কোটি টাকা।
দেশের ব্যবসায়িদের সংগঠন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স (ডিসিসিআই) হরতালের ক্ষতি সম্পর্কে একটি পরিসংখ্যান করেছে। সে হিসেবে বছরে ৪০ দিন হরতাল হলে ৬৪ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়। প্রতিদিন গড়ে ক্ষতি হয় ১৬০০ কোটি টাকা।
ডিসিসিআই তাদের পরিসংখ্যানে দেখিয়েছে, তৈরি পোশাক খাতে একদিনের হরতালে ৩৬০ কোটি টাকার অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়। রাজস্ব ক্ষতি হয় ২৫০ কোটি টাকা। ক্ষুদ্র ব্যবসা ও পাইকারি বাজার, শপিং মল, শো রুমের ক্ষতির পরিমান দাঁড়ায় ৬০০ কোটি টাকা। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির পরিমাণ ৫০ কোটি টাকা।
এছাড়া পরিমংখ্যানে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ক্ষতির পরিমাণ দেখানো হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। পর্যটন শিল্পের ক্ষতি ৫০ কোটি টাকা। স্টিল মিলস, সিরামিক, সিমেন্ট, রড, এডিবল অয়েল, কাগজসহ সব উৎপাদনকারী কারখানার একদিনের হরতালে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ১০০ কোটি টাকা। অপরদিকে একদিনের হরতালে শিক্ষা খাতে ক্ষতির পরিমাণ ৫০ কোটি টাকা।
পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমই’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, একদিনের হরতালে তাদের ক্ষতির পরিমাণ কমপক্ষে ১১০ কোটি টাকা। হরতালের কারণে ১৯৯০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে তাদের ক্ষতি হয়েছে ৮০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। শুধু ১৯৯৯ সালেই ক্ষতির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১৩৫ কোটি টাকা। এ হিসাবে প্রতি বছরে ক্ষতি হয়েছে ৮ হাজার ৩৮ কোটি টাকা।
হরতাল সম্পর্কে ব্যবসায়িদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. হেলাল উদ্দিন জানান, রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি থাকবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু অর্থনীতিকে ধ্বংস করছে এমন কর্মসূচি কখনও কাম্য নয়।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো এগিয়ে যাচ্ছে। যদি এই মুহূর্তে হরতালের মতো কর্মসূচির কারণে দেশ উন্নয়নে পিছিয়ে পড়ে তাহলে কখনও অর্থণীতির মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারবে না। আর এজন্য আইন করে হরতাল বন্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বার বার আহবান জানানো হচ্ছে।’
এদিকে হরতালে সারা দেশের সঙ্গে পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকে। ফলে পরিবহন শিল্পে ব্যাপক ক্ষতিসাধন হচ্ছে। হরতালের ক্ষতি সম্পর্কে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েতুল্লাহ খান জানান, সারা দেশে ৩ লাখ গণপরিবহন চলাচল করছে। হরতালে জেলা শহরগুলোতে পরিবহন চলাচল করে। কিন্তু রাজধানী থেকে দূরপাল্লার কোনো পরিবহন চলাচল করে না। বন্ধ থাকা পরিবহনের সংখ্যা ৬০ শতাংশ। প্রতিটি পরিবহনে প্রতিদিন গড়ে ৮ হাজার টাকা আয় হলে হরতালের কারনে সে আয় হচ্ছে না। সে হিসেবে প্রতিদিন পরিবহন ব্যবসায়িদের লোকসানের পরিমান দাঁড়ায় ১৪৪ কোটি টাকা।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, গত বছর ৬ মাসে দেশে মোট ৫৫টি হরতাল-অবরোধ হয়েছে। এই সময়ে রাজনৈতিক সহিংসতায় ক্ষতি হয়েছে ৪৯ হাজার কোটি টাকা। ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ১৮০ দিনের মধ্যে ওই হরতাল-অবরোধ হয়েছে। সিপিডি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে একদিনের হরতালে ক্ষতি হয় ৮৯১ কোটি টাকা।
হরতাল প্রসঙ্গে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্ট হাজী মোহাম্মদ গোলাম মাওলা বলেন, ‘বেসরকারি হিসেব মতে বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিদিন ৬০০ কোটি টাকা লেনদেন হয়। হরতালে অধিকাংশ দোকান খোলা থাকে কিন্তু দেশের বিভিন্ন প্রাপ্ত থেকে ক্রেতারা আসতে পারে না। ফলে হরতালে প্রতিদিন মোট লেনদেনের ৭৫ শতাংশ হয় না। এতে ব্যবসায়িরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হয়।’
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘হরতাল বন্ধের জন্য কোর্টে রিট হয়েছিল। কিন্তু হরতাল নাকি গণতন্ত্রের ভাষা তাই সেই রিট খারিজ হয়েছে শুনেছি।’