নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে রক্ষা করতে পারলেই শিশুদের ভবিষ্যত সুন্দর হবে বলে মন্তব্য করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরী।
শনিবার বেলা ১১টায় ১ নম্বর নিউ বেইলী রোডস্থ সামাজিক শিক্ষাকেন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ‘সামাজিক শিক্ষাকেন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’ রক্ষা কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রাশেদা কে. চৌধুরী বলেন, ‘কোমলমতি শিশুদের শিক্ষা জীবন রক্ষা করতে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। সামাজিক শিক্ষা কেন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রক্ষা ও পুননির্মাণ এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।’
সাবেক এ উপদেষ্টা বলেন, ‘ঢাকা শহরের পঞ্চাশ বছরের উপরের প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভূমিদস্যুরা নগ্নভাবে দখল করে নেয়ার পায়তারা করছে। সরকারকে এখনই শক্ত হাতে এসব ভূমিদস্যুদের মোকাবেলা করতে হবে। এতে করে সারাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষা পাবে।’
অতি দ্রুত সামাজিক শিক্ষা কেন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রক্ষায় উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য তিনি মন্ত্রণালয় ও সরকারকে আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘এটি অত্র এলাকার একমাত্র বিদ্যালয়। ১৯৬২ সালে যে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আমি বিশ্বাস করতে চাই না, গার্লস গাইড সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হয়ে সেই বিদ্যালয়টি বেদখল করার পায়তারা করছে। আমি বিশ্বাস করতে চাই ছোট ছোট কোমলমতি শিশুদের কথা বিবেচনা করে গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর একসাথে যৌথভাবে কাজ করে এই বিদ্যালয়টিকে রক্ষা ও পুননির্মাণ করবে।’
সুপ্রিমকোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সুপ্রিমকোর্টের এ ঐতিহাসিক রায়ের কারণেই আজ এ ভাঙাচোরা বিদ্যালয়ের নীচে আমরা বসতে পেরেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ স্কুলের পাশেই ঐতিহ্যবাহী ভিকারুন নিসা নুন স্কুল ও সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুলসহ অনেক স্কুল রয়েছে। সে সমস্ত স্কুলে এদেশের ধনীর সন্তানেরা পড়ে বিধায় সেখানে সকলের দৃষ্টি রয়েছে। আর এ স্কুলে দরিদ্র, বঞ্চিত শ্রেণীর সন্তানরা পড়ে বিধায় কারো কোনো দৃষ্টি নেই।’
তিনি গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এ স্কুল রক্ষা না হওয়া পর্যন্ত আপনারা আপনাদের কলম চালিয়ে যাবেন।’
তিনি সাধারণ নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধভাবে এ স্কুল রক্ষা করার জন্য আহ্বান জানান।
রক্ষা কমিটির সভাপতি নাদিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন ছাত্র শিক্ষক অভিভাবক সমন্বয় পরিষদের মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈসা, স্কুল কমিটির চেয়ারম্যান শামা চৌধুরী, স্কুল কমিটির উপদেষ্টা ড. মোমেনা খাতুন, তানভীর মোর্শেদ খান, আসমিন আরা রাশেদা, স্কুলের প্রধান শিক্ষক রওশন আরা বেগম, রক্ষা কমিটির সেক্রেটারি শাহানেওয়াজ, স্কুল কমিটির অভিভাবক ডা. মাজেদা আহমেদ, রাইহান আক্তার রনি প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে নাদিম চৌধুরী বলেন, ‘অবিলম্বে স্কুলের মূল গেইট খুলে দিতে হবে। স্কুলের স্থাপনা পুননির্মাণ করতে হবে এবং হাইকোর্টের রায়কে কার্যকর করার জন্য রাষ্ট্রকে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ভবিষ্যতে এই স্কুলের ন্যায় অন্যকোন স্কুল যদি সারাদেশে দখল হয় তবে রক্ষা কমিটি তাদের পাশে গিয়ে এদেশের সুশীল সমাজ, শিক্ষক সমাজ ও সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে মাঠে আন্দোলন চালিয়ে যাবে।’