নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে শিক্ষার মান এখনো ভালো কোনো পর্যায়ে পৌঁছতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পণামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, ‘আমি স্বীকার করি, শিক্ষার মান যেখানে যাওয়া দরকার সেখানে যাচ্ছে না। তবে আমি আশা করি, ভবিষ্যতে আমরা শিক্ষার মান ভালো করতে পারবো।’
শনিবার দুপুরে মিরপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমিতে (বিবিটিএ) বিইএফ ও বাংলাদেশ ব্যাংক আয়োজিত ‘বাংলাদেশে অর্থনৈতিক গবেষণায় চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
শিক্ষার মান নিয়ে একই ধরনের মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা কমিশনের প্রথম ডেপুটি চেয়ারম্যন ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. নূরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে কি-নোট উপস্থাপনকালে তিনি বলেন, ‘গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষাব্যবস্থা এখানো আমাদের দেশে চালু হয়নি। যে কয়েকজন ভালো শিক্ষক আছে তারা একাধারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে একসাথে শিক্ষা দিয়ে থাকেন। এতে করে শিক্ষার গুণগত মান কমে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কতজন শিক্ষক একটি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ আছে তা দিয়ে শিক্ষার মান বিচার করা যাবে না। এর জন্য দরকার গুণগত শিক্ষা। এছাড়া গুণগত শিক্ষা দারিদ্র্য কমিয়ে আনতে এবং সামাজিক নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’
দেশে অর্থনৈতিক গবেষণার জন্য ভালো কোনো ব্যবস্থা নেই উল্লেখ করে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘গবেষণার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত তথ্যের স্বল্পতা রয়েছে। আর তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা কম।’ পোশাক খাতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এত বড় একটি সেক্টর যেখানে এত এত লোক কাজ করে। অথচ তাদের কোনো নির্দিষ্ট তথ্য নেই। আসলে কতজন শ্রমিক, কতটি কারখানা রয়েছে সে সম্পর্কেও কোনো সঠিক তথ্য কারো কাছে নেই।’
এসময় পরিকল্পনা মন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পণা, গবেষণা ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এই সীমাবদ্ধতা একদিনে শেষ হবে না। কিন্তু তারপর আমরা এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। কাঠামোগত টেকসই উন্নয়ন এবং যথেষ্ট লজিস্টিক সাপোর্টের অভাবে আমরা পিছিয়ে আছি। যে কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আমাদের দেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হচ্ছে না।’
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘২০২১ সালের মধ্যে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবো। এ সময়ের মধ্যে মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে। আর শিক্ষার হার হবে শতভাগ। এছাড়া ২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের অর্থনীতিকে নলেজ বেইজড অর্থনীতিতে পরিণত করবো। এ সময়ের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ার স্বপ্ন আমাদের রয়েছে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাবেক অর্থমন্ত্রী মো. সাইদুজ্জামান। তিনি তার বক্তব্যে অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে আরও বেশি শক্তিশালী করার ওপর জোর দেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমিতির প্রথম সভাপতি মহিউদ্দিন আলমগীর, পিআরআইয়ের চেয়ারম্যান ড. সফিক আহমেদ প্রমুখ।