লমনিরহাট প্রতিনিধি : বাংলার কৃষিজীবী সমাজে শস্য উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে যে সকল আচার-অনুষ্ঠান ও উৎসব পালিত হয়, নবান্ন তার মধ্যে অন্যতম। নবান্ন উৎসবের সঙ্গে মিশে আছে বাঙালীর ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি। আর তাই অগ্রহায়ণের শুরুতেই লালমনিরহাটে চলছে উৎসবের নানা আয়োজন।
নতুন ধান কাটা আর সেই ধানের প্রথম অন্ন খাওয়াকে কেন্দ্র করে পালিত হয় নবান্ন উৎসব। বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। এ যেন সত্যি হৃদয়ের বন্ধনকে আরও গাঢ় করার উৎসব।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম দিনটিকে লালমনিরহাটের কিষাণ-কিষাণীরা পালন করছেন নানা উৎসবের মধ্য দিয়ে। এ উৎসব চলবে অগ্রহায়ণ মাসের দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত। এই দিনে জেলার ৪৫টি ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামেই চলে খেজুর রসের পিঠা-পায়েস তৈরির ধুম। নিমন্ত্রণ করা হয় আত্বীয় স্বজনকে।
লালমনিরহাট কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক মো.সাফায়েত হোসেন জানান, রেওয়াজ অনুয়ায়ী প্রতি বছর অগ্রহায়ণের প্রথম দিনকে নবান্ন উৎসব ধরে খেজুর রস দিয়ে তৈরি নানা বৈচিত্রের পিঠা উৎসবে মেতে উঠেন লালমনিরহাটবাসী। তবে এ উৎসবের অন্যতম উপাদান নতুন ধান আর খেজুরের গুড়।
প্রকৃতিতে শীতের আগমনী বার্তা সমাগত। গত দু’দিন থেকে শীতও জেকে বসতে শুরু করেছে। আর এই শীতের শুরুতে বাঙালীর নতুন ধানের পাশাপাশি অন্যতম আকর্ষণ খেজুর গুড়ের তৈরি পিঠা-পায়েস।
দিন বদলের সঙ্গে লালমনিরহাটের জীবনযাত্রায় অনেক কিছু বদলে গেলেও বদলায়নি খেজুর রস সংগ্রহ, গুড়-পাটালি তৈরির পদ্ধতি আর নবান্নের প্রথম দিনে নতুন ধান দিয়ে পিঠা তৈরির মহোৎসব।
তাই শীতের আগমনী বার্তা জানান দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এখানকার গাছিরা প্রস্তুতি নেয় খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের। এজন্য প্রথমেই খেজুর গাছ কেটে পরিস্কার করে তারা। এরপর শুরু হয় রস সংগ্রহ।
কমলাবাড়ি গ্রামের আমিনুল গাছি জানান, নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে কার্তিক মাসের শুরু থেকেই খেজুর গাছের পরিচর্যা চলে। নবান্নের প্রথম দিনে ৫৩ মণ খেজুরের রস বিক্রি করেছেন তিনি।
নবান্ন উৎসবে খেজুরের গুড় ও রস নতুন মাত্রা আনে গৃহস্থদের রসুইঘরে। এবারও লারমনিরহাটের কিষাণ-কিষাণীরা মেতেছিলেন নবান্ন উৎসব পালনের জন্য।