পাঞ্জেরী ডেস্ক
পাকিস্তানে রাজনৈতিক অচলাবস্থা অব্যাহত রয়েছে। সরকার ও আন্দোলনকারীদের অনড় অবস্থানের কারণে শিগগিরি এ অবস্থা অবসানের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
নওয়াজ শরিফের নেতৃত্বাধীন মুসলিম লীগ সরকার ও ইমরান খান এবং তাহিরুল কাদরির নেতৃত্বে অবস্থান কর্মসূচি পালনকারীরা নিজ নিজ অবস্থান ছাড়তে অস্বীকার করেছেন। ফলে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে দেশটির রাজনীতি।
প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ পদত্যাগ করতে রাজি নন আবার অবস্থান কর্মসূচির সংগঠক হিসেবে ইমরান খান ও তাহিরুল কাদরিও বলেছেন, নওয়াজ শরিফ পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা ইসলামাবাদের রেড জোন ছাড়বেন না।
এদিকে, গত ৭২ ঘণ্টায় পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত তিনজন নিহত ও কয়েকশ’ মানুষ আহত হয়েছে। এর মাঝে দেশটির প্রভাবশালী সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা জল্পনা। সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কোনো না কোনোভাবে সেনাবাহিনী ইমরান খানের আন্দোলনে সমর্থন দিচ্ছে। এ দৃষ্টিভঙ্গি কারণে দেশটিতে ক্ষণে ক্ষণে নানা গুজবও ছড়িয়ে পড়ছে। আর এতে অনেকটা ঘি ঢেলেছেন ইমরান খানের দলের বহিষ্কৃত সভাপতি জাভেদ হাশমি। তিনি বলেছেন, সেনাবাহিনীর পরকিল্পনা মতো ইমরান খান তার আন্দোলন কর্মসূচি পরিচালনা করছেন।
ইমরান এ অভিযোগ সুস্পষ্ট ভাষায় নাকচ করেছেন। তিনি বলেছেন, তিনি সেনাবাহিনী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নন বরং তিনি তার আদর্শ দ্বারা পরিচালিত হন। এ অবস্থায় দেশটির বেশিরভাগ মানুষ এখন তাকিয়ে আছে সুপ্রিম কোর্ট ও শক্তিশালী সেনাবাহিনীর দিকে। এরই মধ্যে নওয়াজ শরিফের পদত্যাগ দাবিতে আদালতে পিটিশন দায়ের করেছেন বিরোধীরা। অন্যদিকে, ইমরান ও তাহিরের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার পর নতুন করে আরো তিনটি মামলা দেয়া হয়েছে।
এদিকে, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, ইমরান খান ও তাহিরুল কাদরির সঙ্গে আলোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে সরকার বর্তমান অচলাবস্থায় মোটেই উদ্বিগ্ন নয়। তিনি বলেন, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা হবে তবে আইন কাউকে হাতে তুলে নেয়ার সুযোগ দেয়া হবে না।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর বা আইএসপিআর এক বিবৃতিতে সোমবার বলেছে, তারা কোনো পক্ষকে সমর্থন দিচ্ছে না। বিবৃতিতে বলা হয়েছে- “সামরিক বাহিনী হচ্ছে একটি অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং গণতন্ত্রের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধাশীল। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে, আন্দোলনকারীদের প্রতি সসমর্থন দেয়ার বিষয়ে সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে নানা রকম কথা বলা হচ্ছে।”
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর পদত্যাগের কথা একেবারেই উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, জনগণ নির্বাচনের মাধ্যমে তাকে যে ম্যান্ডেট দিয়েছে তা তিনি হাইজ্যাক হতে দেবেন না।-ওয়েবসাইট