রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক ড. একেএম শফিউল ইসলাম হত্যার ঘটনায় জামায়াত শিবির এবং সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জঙ্গি কোনো সংগঠনের দিকে লক্ষ্য রেখে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।
বুধবার শিক্ষক শফিউল হত্যা মামলায় ১১ জনকে রিমান্ডে নেয়ার শুনানির সময় পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতকে এমন তথ্য দেয়া হয়েছে।
শুনানিকালে আদালত পরিদর্শক আব্বাস হোসেন ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মতিহার থানার পরিদর্শক আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, অধ্যাপক ড. শফিউল ইসলাম হত্যাকাণ্ডে জামায়াত ও জঙ্গিদের সংশ্লিষ্টতার তথ্য তদন্তে তারা পেয়েছেন।
এ মামলায় যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা যেহেতু জামায়াত ও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত, তাই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরো তথ্য পাওয়া যাবে বলে আদালতকে জানিয়েছেন পরিদর্শক আব্বাস ও আলমগীর হোসেন।
রাবি শিক্ষক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন জামায়াত নিয়ন্ত্রিত বিনোদপুর ইসলামিয়া কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়ন কবির, ওই কলেজের শিক্ষক ফজলুল হক, চৌদ্দপাই এলাকার পল্লী চিকিৎসক মোশারফ হোসেন, আব্দুল্লা আল মাহামুদ, মশিউর রহমান, হাসিবুর রহমান, জিন্নত আলী, সাইফুদ্দিন, রেজাউল করিম, সাগর ও আরিফ।
বুধবার দুপুরে শুনানি শেষে বিচারক শারমিন আক্তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে নেয়ার আদেশের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালত থেকেই মতিহার থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের পরের দিন রাতে বিশ্বদ্যিালয়ের রেজিস্টার অধ্যাপক ড. এন্তাজুল হক বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মতিহার থানার পরিদর্শক (ওসি-তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘জামায়াত-শিবির বিভিন্ন সময় গোপনে বিভিন্ন নামে জঙ্গি কর্মকাণ্ড চালিয়ে থাকে। এমন তথ্য আমাদের কাছে আছে। শুধু তাই না, অধ্যাপক শফিউল হত্যাকাণ্ডে জামায়াত ইসলাম নিয়ন্ত্রিত জঙ্গি সংগঠনের জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। যা আদালতকে বলা হয়েছে।’ তদন্তের স্বার্থে এর থেকে বেশি কিছু বলতে রাজি হননি ওসি আলমগীর।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সুশান্ত সরকার বলেন, ‘আদালতে গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল। আদালত সবার বিপক্ষে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। পুলিশ তাদের জঙ্গি হিসেবেও সন্দেহ করছে।’
অ্যাডভোকেট সুশান্ত আরো বলেন, ‘জামায়াত ও তাদের নিয়ন্ত্রিত জঙ্গি সংগঠন রাবি শিক্ষক শফিউল ইসলাম হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকাতে পারে বলে আদালতকে জানিয়েছে পুলিশ। তাই গ্রেপ্তারকৃদের অধিক জিজ্ঞাসাবাদে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে এবং আদালত তা বিবেচনায় এনে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।’
তবে আসামি পক্ষের আইনজীবী একরামুল হক জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা জামায়াতের সমর্থক। তবে তারা সাধারণ মানুষ। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। হয়রানিমূলক তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেন একরামুল হক।