ঢাকাসোমবার , ২৪ নভেম্বর ২০১৪
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি ও অন্যান্য
  5. খেলাধুলা
  6. গল্প ও কবিতা
  7. জাতীয়
  8. তথ্যপ্রযুক্তি
  9. দেশজুড়ে
  10. ধর্ম ও জীবন
  11. প্রবাস
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. বিশেষ প্রতিবেদন
  15. মুক্তমত
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মোবারকের ফাঁসির আদেশ

দৈনিক পাঞ্জেরী
নভেম্বর ২৪, ২০১৪ ১১:১৯ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

Mobarakনিজস্ব প্রতিবেদক : একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা ও জামায়াতের সাবেক রুকন মোবারক হোসেনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার দুপুর ১২টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ রায় ঘোষণা করেন।
মোবারকের বিরুদ্ধে গঠন করা পাঁচ অভিযোগের মধ্যে তিনটি প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে এক নম্বর অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড ও তিন নম্বর অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। বাকি তিন অভিযোগ থেকে খালাস পান মোবারক।
যে অভিযোগে ফাঁসি
অভিযোগ-১: একাত্তরের ২২ আগস্ট রাজাকার বাহিনীর সদস্য মোবারক হোসেনসহ অন্য রাজাকাররা আখাউড়ার টানমান্দাইল গ্রামে হাজি নূর বকশের বাড়িতে সভা ডাকেন। বেলা ২টা-আড়াইটার দিকে ১৩০-১৩২ জন গ্রামবাসীকে ওই বাড়িতে নিয়ে জড়ো করা হয়। তখন মোবারক ও তার সহযোগীরা পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সেখানে অভিযান চালিয়ে ওই গ্রামবাসীদের আটক করে গঙ্গাসাগর দীঘির কাছে পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে নিয়ে আটকে রাখেন। আটক ব্যক্তিদের মোবারক ও তার সহযোগীরা জিজ্ঞাসাবাদ ও নির্যাতন করেন। তিনি টানমান্দাইল গ্রামের ২৬ জন ও জাঙ্গাইল গ্রামের সাতজন এই ৩৩ জনকে বাছাই করে তেরোঝুড়ি হাজতখানায় নিয়ে যান। ২৩ আগস্ট পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকাররা ওই ৩৩ জনকে দিয়ে গঙ্গাসাগর দীঘির পশ্চিম পাড়ে একটি গর্ত খোঁড়ায়, পরে তাদের গুলি করে হত্যা করে এবং ওই গর্তে মাটি চাপা দেয়।
যে অভিযোগে যাবজ্জীবন
অভিযোগ-৩: ছাতিয়ান গ্রামের আবদুল খালেক মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে সহযোগিতা করতেন। একাত্তরের ১১ নভেম্বর রাত ৮টা-৯টার দিকে মোবারক সশস্ত্র রাজাকার সহযোগীদের নিয়ে খালেককে অপহরণ করে সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করেন। খালেকের ছেলে রফিকুল ইসলামসহ অন্যরা এর প্রত্যক্ষদর্শী। ওই রাতে খালেককে তিতাস নদীর পশ্চিম পাড়ে বাকাইল ঘাটে নিয়ে গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়। পরদিন স্বজনেরা তার লাশ উদ্ধার করে কোলামুড়ি কবরস্থানে দাফন করেন।
সোমবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আনোয়ারুল ইসলাম মোট ৯২ পৃষ্ঠার রায় পড়া শুরু ‍করেন। রায়ের শেষ অংশ পড়েন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম। তিনি দণ্ড ঘোষণা দেন। এটি ট্রাইব্যুনাল-১ এর ষষ্ঠ রায়।
মোবারকের বিরুদ্ধে গত বছরের ২৩ এপ্রিল হত্যা, আটক, নির্যাতন ও অপহরণের ঘটনায় ট্রাইব্যুনালে ৫টি অভিযোগ (চার্জ) গঠন করা হয়। ২০১৩ সালের ১২ মার্চ অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল-১। ওই দিনই জামিনে থাকা মোবারকের জামিন বাতিল করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এরপর ২০ মে থেকে প্রসিকিউশনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। মোট ১২ জন রাষ্ট্রপক্ষে এবং আসামি নিজে ও তার ছেলে সাফাই সাক্ষ্য দেন। গত ২ জুন মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়। গতকাল রোববার মামলাটি সোমবারের কার্যতালিকায় রাখা হয়।
প্রমাণিত হয়নি যেসব অভিযোগ
অভিযোগ-২: মুক্তিযুদ্ধকালে মোবারক ও অন্য স্বাধীনতাবিরোধীরা ‘আনন্দময়ী কালীবাড়ি’ নামের হিন্দু মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর ও মালামাল লুটের পর দখল করে এর নাম রাখেন ‘রাজাকার মঞ্জিল’। ২৪ অক্টোবর মোবারক শিমরাইল গ্রামের আশুরঞ্জনকে অপহরণ করে আহত অবস্থায় চার দিন রাজাকার মঞ্জিলে আটকে রাখেন। পরে মোবারক ২৮ অক্টোবর তাকে কুড়ুলিয়া খালের পাড়ে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেন।
অভিযোগ-৪: একাত্তরের ২৪-২৫ নভেম্বর বেলা ২টা-আড়াইটার দিকে মোবারকের নেতৃত্বে রাজাকাররা খড়মপুর গ্রামের খাদেম হোসেন খানকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার স্টেশন রোড থেকে অপহরণ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে স্থাপিত সেনাক্যাম্পে আটকে রাখেন। পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকাররা খাদেমকে উল্টো করে ঝুলিয়ে অমানবিক নির্যাতন করে। পরে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারে পাঠানো হয়। ৬ ডিসেম্বর অন্য কয়েকজন বন্দীর সঙ্গে খাদেমকে কুড়ুলিয়া খালের পাড়ে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।
অভিযোগ-৫: একাত্তরের ২৮-২৯ নভেম্বর রাত ১১টার দিকে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের সঙ্গে নিয়ে মোবারক খড়মপুর গ্রামের আবদুল মালেক ও আমিরপাড়া গ্রামের মো. সিরাজকে অপহরণ করেন। তাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজের সেনাক্যাম্পে নিয়ে অমানবিক নির্যাতনের পর কারাগারে পাঠানো হয়। ৬ ডিসেম্বর পূর্বপরিকল্পনার অংশ হিসেবে মোবারক ও তার রাজাকার সঙ্গীরা কারাগারে আটক আরো কয়েকজনের সঙ্গে সিরাজকে কুড়ুলিয়া খালের পাড়ে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেন।