ঢাকামঙ্গলবার , ২ ডিসেম্বর ২০১৪
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি ও অন্যান্য
  5. খেলাধুলা
  6. গল্প ও কবিতা
  7. জাতীয়
  8. তথ্যপ্রযুক্তি
  9. দেশজুড়ে
  10. ধর্ম ও জীবন
  11. প্রবাস
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. বিশেষ প্রতিবেদন
  15. মুক্তমত
আজকের সর্বশেষ সবখবর

এফভি বন্ধন উদ্ধারের সম্ভাবনা নেই

দৈনিক পাঞ্জেরী
ডিসেম্বর ২, ২০১৪ ৮:১১ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

bay-of-bengal-fishing-boat
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :

গভীর বঙ্গোপসাগরে ‘বসুন্ধরা-৮’ জাহাজর ধাক্কায় ডুবে যাওয়া ফিশিং ভ্যাসেল ‘এফভি বন্ধন’ এর অবস্থান সনাক্ত হলেও তা উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। মঙ্গলবার রাতে উদ্ধার কাজে সমাপ্তির ঘোষণা আসতে পারে বলে জানা গেছে।

গত শুক্রবার এফবি বন্ধন ডুবে যাওয়ার পর শনিবার সকালে সেন্টমার্টিন থেকে ২৮ নটিক্যাল মাইল দূরে সাইড স্ক্যান সোনারের মাধ্যমে ডুবে যাওয়া ফিশিং ভ্যাসেলটি সনাক্ত করা হয়েছে বলে দাবি করে নৌবাহিনী।

তাদের দাবি, ডুবে যাওয়া ভ্যাসেলটি সমুদ্রের ১২০ ফুট গভীরে এবং উল্টো হয়ে থাকায় গত পাঁচদিন ধরে চেষ্টা করেও প্রবল স্রোত আর ঠাণ্ডার মধ্যে সেখানে প্রবেশের কোনো পথ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ওই ফিশিং ভ্যাসেলে ডুবে নিখোঁজ থাকা ২৬ জনের সলিল সমাধি ট্রলারটির কেবিনের ভেতরেই ঘটে থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকারীরা।

এর আগে গত রোববার দুর্ঘটনার পর প্রাণে বেঁচে আসা দুই নাবিক জানিয়েছিলেন, গভীর রাতে এ দুর্ঘটনা হওয়ায় সকলেই কেবিনের ভেতর অবস্থান করছিলেন। এতে করে দুর্ঘটনার পাঁচদিন পর এই গভীর সমুদ্রে নিখোঁজ কারোরই বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন নৌ বাহিনীর কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গোয়েন্দা অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের কমান্ডার শামীম মোহাম্মদ খান মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, ‘নৌবাহিনীর জাহাজ ‘খাদেম’ ও ‘বঙ্গবন্ধু’র পাশাপাশি ডুবুরি জাহাজ ‘সৈকত’ এবং বেঙ্গল ফিশারিজের নিজস্ব জাহাজ ‘যাত্রা’ নিখোঁজ নাবিকদের সন্ধানে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সমুদ্রের তীব্র স্রোত ও প্রচণ্ড ঠাণ্ডার পাশাশি ট্রলারটি একেবারে উল্টো হয়ে তলা উপর দিকে থাকায় ডুবুরিরা নানান চেষ্টা করেও কোনোভাবেই সেখানে ঢুকতে পারছেন না। ফলে সেখানে থাকা লাশ উদ্ধার কিংবা ট্রলারটিকে উপরে তোলা যাচ্ছে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘গত চার দিন ধরে নানাভাবে চেষ্টা চালিয়েও উদ্ধার কার্যক্রমে কোনো পজেটিভ রেজাল্ট পাওয়া যাচ্ছে না। আজ বিকেলের মধ্যে সবকিছু বিশ্লেষণ করে উদ্ধার কার্যক্রম নিয়ে একটি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে উদ্ধারকারী দলের পক্ষ থেকে। হয়তো ট্রলারটিকে উদ্ধার ছাড়াই দুর্ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে হবে নৌবাহিনীকে। তবে উদ্ধারকারীদল শেষ চেষ্টা করে যাচ্ছে।’

গত পাঁচ দিনেও খোঁজ মেলেনি নিখোঁজ থাকা ২৬ জনের। প্রিয়জনের জীবিত থাকার আশা ছেড়ে দিয়ে এখন মৃত হলেও প্রিয়জনের লাশের অপেক্ষায় স্বজনরা। হাতে ছবি নিয়ে অধীর আগ্রহে পাঁচদিন ধরে নিখোঁজ মাঝিমাল্লাদের স্বজনরা কর্ণফুলী নদীর বাংলাবাজার ঘাটে আহাজারি করছেন। তবে অসহযোগিতার অভিযোগের ভেতর গত সোমবার ডুবে যাওয়া এফবি বন্ধনের মালিক প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল ফিশারিজের পক্ষ থেকে নিখোঁজ থাকা মাঝিমাল্লার স্বজনদের নামের তালিকা করা হয়েছে ক্ষতিপূরণ দেয়ার আশ্বাস দিয়ে।

বেঙ্গল ফিশারিজের দেয়া তালিকা মতে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ফিশিং ভ্যাসেলের স্কিপার মাহবুবুল হক মজুমদার, চিফ ইঞ্জিনিয়ার ওয়াই এ খন্দকার, ফার্স্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাব উদ্দিন, সেকেন্ড অফিসার ইব্রাহিম খলিল, ফোর্থ অফিসার আকতার হোসেন। ক্রু নুরুল ইসলাম-১, মোখলেস খান, ইলিয়াস-১, ইসমাইল মিয়া, বেলায়েত হোসেন-১, আবদুস সাত্তার, হাবিবল্লাহ কায়সার, হরি জলদাশ, মিখাইল হোসেন, বাদল জলদাশ, রণজিত কুমার দাশ, মোহাম্মদ  রহিম, আবুল কাশেম, রোকন, জাহিদ হাসান, ইলিয়াস-২, ফোরকান মিয়া, জামাল মিয়া, মনির হোসেন, নীরব, জসিম, জহির, নাসির, ইউসুফ।

এর আগে গত শুক্রবার গভীর রাতে সেন্টমার্টিন থেকে ৩০ নটিক্যাল মাইল দূরে বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন সিঙ্গাপুরগামী ‘বসুন্ধরা-৮’ নামের একটি জাহাজের ধাক্কায় ডুবে যায় এফভি বন্ধন নামে একটি ফিশিং ভ্যাসেল। ওই সময় দু’জনকে জীবিত ও একজনের লাশ উদ্ধার করে অপর একটি ফিশিং ভ্যাসেল উদ্যম। ওই সময় নিখোঁজ হন এফভি বন্ধনে থাকা ২৬ জন।

এঘটনায় এমভি বসুন্ধরা-৮ কে দায়ী করে এর বিরুদ্ধে পতেঙ্গা থানায় ডুবে যাওয়া জাহজটির মালিক প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল ফিশারিজের করা জিডিটি তদন্ত করছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার অপারেশনাল কাজী কামরুল আমিন বাদী হয়ে নগরীর পতেঙ্গা থানায় এ জিডি করেন। এঘটনায় নৌ-বাণিজ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে গত শনিবার।