ঢাকামঙ্গলবার , ২ ডিসেম্বর ২০১৪
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি ও অন্যান্য
  5. খেলাধুলা
  6. গল্প ও কবিতা
  7. জাতীয়
  8. তথ্যপ্রযুক্তি
  9. দেশজুড়ে
  10. ধর্ম ও জীবন
  11. প্রবাস
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. বিশেষ প্রতিবেদন
  15. মুক্তমত
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বনবেগুনের সঙ্গে টমেটোর গ্রাফটিং, স্বাবলম্বী দেড়শ পরিবার

দৈনিক পাঞ্জেরী
ডিসেম্বর ২, ২০১৪ ৯:১৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

TOMATO-1417430701
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি :

মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি গ্রামের দেড় শতাধিক পরিবার বনবেগুনের সঙ্গে টমেটোর গ্রাফটিং করে চারা উৎপাদন, বিক্রি ও চাষ করে সাফল্যের মুখ দেখেছে। সর্বপ্রথম বনবেগুনের সঙ্গে টমেটোর গ্রাফটিং সফলভাবে সম্পন্ন করেন কৃষক ব্রজেন্দ্র সিংহ। তিনি কৃষি বিষয়ক পত্রিকা ‘কৃষিকথা’য় প্রকাশিত একটি প্রবন্ধ পড়ে এ বিষয়ে গবেষণা শুরু করেন। ১৯৯০ সাল থেকে চলে তার গবেষণা। এরপর পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করে এক পর্যায়ে তিনি সফল হন। এখন তিনি  বাণিজ্যিকভাবে গ্রাফটিং করছেন।

ব্রজেন্দ্র সিংহের সাফল্য দেখে এলাকার অনেক কৃষক এই পদ্ধতি অনুসরণ করে আর্থিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন। ফলে সব ঋতুতেই এ অঞ্চলে টমেটো চাষ হচ্ছে। শুধু তাই নয়, গ্রাফটিং পদ্ধতিতে উৎপাদিত টমেটোর চারা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চাষীরা সংগ্রহ করছেন। অনেকে কমলগঞ্জে উৎপাদিত গ্রাফটিং পদ্ধতিতে উৎপন্ন চারা উচ্চমূল্যে বাজারজাতও করছেন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ও আদমপুর ইউনিয়নের তিলকপুর, জামিরকোনা ও ঘোড়ামারা গ্রামের দেড় শতাধিক পরিবার এই পদ্ধতিতে উৎপাদিত টমেটোর চারা দিয়ে চাষাবাদ করছেন। টমেটোর চারার গ্রাফটিং-এর পাশাপাশি অনেক কৃষক লাউ গাছের চারার সঙ্গে তরমুজের গ্রাফটিং করে চাষ করছেন। ৬০ দিনের বনবেগুন গাছের চারা সংগ্রহ করে ‘টমেটো বারী-৪’ বীজের ৩০ দিনের চারার সাথে গ্রাফটিং করা হয়। এরপর ৭-১০ দিন রেখে ক্ষেতে চারা রোপণ করা হয়। এ পদ্ধতিতে উপরে ও নিচে কালো পলিথিন দিয়ে শেড তৈরি করে প্রথমে চারা উৎপাদন করা হয়। এরপর চাষের জমিও পলিথিনের শেড দিয়ে ঢেকে দিতে হয়। এ সময় নিয়ম করে গোবর, সার, কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। নিতে হয় বাড়তি পরিচর্যা। এভাবে দিনে প্রায় চারশ চারার গ্রাফটিং করা সম্ভব। গ্রাফটিং পর্যন্ত দুটি চারা তৈরিতে খরচ হয় প্রায় ৫ টাকা। এরপর ১০-১৫ টাকায় প্রতিটি চারা বিক্রি হয়।

ব্রজেন্দ্র কুমার সিংহ বলেন, ‘প্রথমে আমি তরমুজ চাষ এবং গ্রাফটিং করতাম। পরে টমেটোর গ্রাফটিং শুরু  করি। এতে মাসে ৩ হাজার চারা বিক্রি করে প্রায় ৩০ হাজার টাকা আয় হয়। এখনও প্রায় ১০ হাজার চারা বিক্রির জন্য রয়েছে।’ বিক্রি না হলে তিনি নিজেই এগুলো চাষ করবেন বলে জানান। বছরের শ্রাবণ ও ভাদ্র মাসে টমেটোর গ্রাফটিং চারা বিক্রি করে লক্ষাধিক টাকা আয় করা সম্ভব বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় কৃষক মানিক মিয়া, মুমিন খান এবং আয়ুব আলীর। তারা একবাক্যে স্বীকার করেছেন গ্রাফটিং চারা বিক্রি করে গ্রামের দেড় শতাধিক পরিবারে সচ্ছলতার সুবাতাস বইছে। অনেকে এই কাজ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। কৃষক মানিক মিয়া বলেন, ‘চৈত্র্য মাস পর্যন্ত টমেটো গাছে ধরবে এবং বিক্রি করা যাবে। এ সময় কেজি প্রতি আয় হবে প্রায় ৬০ টাকা।’ তিনি আরো জানান, ২০ শতক জমিতে টমেটো চাষ করতে খরচ হয় প্রায় ৬০ হাজার টাকা। এই টমেটো বিক্রি করে পাওয়া যায় প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা।

কমলগঞ্জ উপজেলার উপ কৃষি কর্মকর্তা  মো. আব্দুন নবী বলেন, ‘এই এলাকায় দেশের প্রথম টমেটোর চারার গ্রাফটিং করা হয়। এখান থেকে বিভিন্ন জেলার কৃষক চারা সংগ্রহ করে চাষাবাদ করছেন। এটি একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য। দেশের অন্যান্য স্থানেও এই পদ্ধতি অবলম্বন করে কৃষকরা লাভবান হতে পারেন।’