ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৪ ডিসেম্বর ২০১৪
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি ও অন্যান্য
  5. খেলাধুলা
  6. গল্প ও কবিতা
  7. জাতীয়
  8. তথ্যপ্রযুক্তি
  9. দেশজুড়ে
  10. ধর্ম ও জীবন
  11. প্রবাস
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. বিশেষ প্রতিবেদন
  15. মুক্তমত
আজকের সর্বশেষ সবখবর

জলডাকাতের তাণ্ডবে সর্বশান্ত জেলেরা

দৈনিক পাঞ্জেরী
ডিসেম্বর ৪, ২০১৪ ৭:৫১ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

Barguna
বরগুনা প্রতিনিধি :
মুক্তিপণের টাকা দিতে না পারায় প্রায় দুই মাস জলডাকাতদের হাতে আটক বরগুনার প্রায় পঞ্চাশজনেরও বেশি জেলে। জেলে পরিবার থেকে টাকা না পেয়ে দিনের পর দিন তাদের ওপর নানা ভাবে চালানো হচ্ছে শারীরিক নির্যাতন। অন্যদিকে, আটক জেলে পরিবারের সদস্যদের দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে।

এমনই এক ব্যথার চাদরে ঢাকা পাথরঘাটা উপজেলার জেলে আবদুল লতিফের পরিবার। গত ২ সেপ্টেম্বর সমুদ্রে ইলিশ শিকার করতে গিয়ে জলডাকাতদের হাতে বন্দী হন তিনি। মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করা হয় ২ লাখ টাকা। দরিদ্র এ পরিবারটি টাকা যোগাড় করতে না পারায় গত ২ মাস ধরে জলডাকাত বেল্লাল বাহিনী নির্যাতন চালাচ্ছে তার ওপর।
এদিকে শুধু দুই ছেলের লেখাপড়াই বন্ধ হয়নি, সঙ্গে তাদের পরিবারকে থাকতে হচ্ছে অনাহারে। শুধু লতিফের পরিবারই নয়, বরগুনার প্রায় অর্ধশত অপহৃত জেলে পরিবারগুলোর একই দশা।

একান্ত সাক্ষাৎকারে লতিফের স্ত্রী হাফিজা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, প্রতিবেশীদের দেয়া সামান্য চাল-ডাল ও কিছু সাহায্যে এনে সন্তানদের নিয়ে দিন কাটাচ্ছি। জলডাকাতরা দুইদিন পর পর ফোন দেয় টাকার জন্য। প্রতিদিন তাকে খুব নির্যাতন করছে। টাকা না দিলে আমার স্বামীকে মেরে ফেলবে। আমাদের মত গড়িবের পাশে কেউ নেই। এখন আল্লাই আমাদের এক মাত্র ভরসা।

জলডাকাতদের হাতে বন্দী বরগুনার পাথরঘাটার জেলে নাসির মৃধার পরিবারের সদস্যরাও জানালেন খেয়ে না খেয়ে দিন কাটনোর কথা।
তার মেয়ে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী নাফিজা আক্তার বলেন, আমার বাবাকে ডাকাতরা নিয়ে গেছে। টাকার অভাবে তাকে ছাড়িয়ে আনতে পারছি না। কেউ যদি পারেন আমার বাবাকে এনে দিন। তাকে জলডাকাতরা খুব মারছে।

এদিকে জলডাকাতদের তাণ্ডব ও কোস্টগার্ডের উদাসীনতা নিয়ে ক্ষোভের শেষ নেই মৎস্যজীবী নেতাদের। বরগুনার পাথরঘাটা ঘাট শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল অভিযোগ করে বলেন, ‘কোস্টগার্ডসহ স্থানীয় প্রশাসন কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার কারণেই পাথরঘাটার শত শত অসহায় গড়িব জেলেদের অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছে জলডাকাতরা। যে কোনো বাহিনীর সদস্যরা আন্তরিক হলেই এ জলডাকাতদের নির্মূল করা সম্ভব। কিন্তু কোস্টগার্ড সাগরে টহল না দিয়ে তারা কূলে পোশাক পরে দায়িত্ব পালন করে।

এ ব্যাপারে পাথরঘাটা কোস্টগার্ডের স্টেশন কমান্ডার লে. রাহাত বলেন, ‘বরগুনার এ সব জেলেরা আমাদের এরিয়ার বাইরে অপহরণ হয়েছে। তবে জেলেদের উদ্ধারে আমাদের দল সর্বদা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।’

এ বিষয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘কারা আটক আছেন এবং কোথায় আছেন এ ব্যাপারে নিশ্চিত কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই, তবে নিশ্চিত হয়েই অভিযান চালানো হবে।

স্থানীয় মৎস্যজীবী সমিতির দেয়া তথ্য অনুযায়ী সুন্দরবনে প্রায় ১২টি জলডাকাতবাহিনী রয়েছে। তবে বর্তমানে যে সব জেলেরা বন্দী রয়েছে তারা অধিকাংশ জেলে “ফেরাউন” ও “বেল্লালবাহিনী” নামে জলডাকাতদের হাতে আটক রয়েছে বলে জানান তারা।