নিজস্ব প্রতিবেদক
২০৪১ সালের মধ্যে আমরা বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে দেখতে চাই। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা করেছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ মানেই যে শুধু ঘরে ঘরে কম্পিউটার ইন্টারনেট থাকবে তা নয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ মানে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, শিক্ষার হার বৃদ্ধি, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবাসহ সবকিছুই রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত করা। দেশকে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করাই ডিজিটাল বাংলাদেশ বলেও জানান তিনি।
বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে অনলাইন পত্রিকার ভূমিকা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশে দিন দিন অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের পাঠক সংখ্যা বাড়ছে। আর তাই তো সময়ের চাহিদা অনুযায়ী দেশের প্রিন্ট মাধ্যমগুলোও পুরোপুরি অনলাইনে চলে আসবে বলে মনে করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তা ছাড়া এটি প্রিন্ট মাধ্যমের জন্য অশনি সংকেতও বটে। দেশ-বিদেশের সংবাদ এখন মানুষের হাতের মুঠোতেই থাকে। তিনি বলেন, আজকের ঘটনা মানুষ আর আগামীকাল জানতে চায় না। ঘটনাস্থল থেকে মুহূর্তের খবর তাৎক্ষণিক প্রকাশ করায় অনলাইন সংবাদমাধ্যম দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মন্ত্রী আরো বলেন, অগ্রসর পাঠকের প্রিয় সংবাদমাধ্যম হয়ে উঠছে এখন অনলাইন।
মন্ত্রী বলেন, ইন্টারনেটের প্রসারে গ্রামের মানুষও এখন মোবাইলে-কম্পিউটারের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে যাচ্ছে। আর এ কারণেই অনলাইন পত্রিকার পাঠক বাড়ছে দিন দিন। ভবিষ্যতে ইন্টারনেটের গ্রাহক আরও বাড়বে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ সম্প্রচার নীতিমালা ও অনলাইন নীতিমালার পক্ষে বলেন, নীতিমালার প্রয়োজন আছে। সংবাদ প্রকাশে দায়িত্বশীল হতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, নীতিমালা গণমাধ্যমের মঙ্গলের জন্যই প্রয়োজন। সম্প্রচার নীতিমালা গণমাধ্যমের জন্য কোন ক্ষতির কারণ নয় বলে তিনি দাবি করেন। এ নীতিমালায় কোথাও শাস্তির কথা বলা নেই।
মৎস্য ও পশু সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য মীর শওকত আলী বাদশা তার রাজনৈতিক জীবনের বর্ণনা দিয়ে বলেন, আমি নিজেও একজন সাংবাদিক। আমি বাগেরহাটে ৩ টি প্রেসক্লাব ভবন নির্মাণ করেছি। এ প্রেসক্লাবগুলো আমার সন্তান সমতুল্য। তবে তিনি বলেন, আমি ও আমার পরিবার বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বাইরে কারো সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক করি না। আমরা যখন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আন্দোলন করেছি তখন দেশে এত গণমাধ্যম ছিলো না। তারপরও যে কয়টি ছিলো সেগুলোর সাথে আমার সুসম্পর্ক ছিল। তৎকালীন সময়ে আমাদের আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য সাংবাদিকরা বিরাট ভূমিকা পালন করেছেন। এ জন্য সংবাদমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি জাতীয় পর্যায়ে সাংবাদিক ও সাংবাদিক নেতাদের বাগেরহাট প্রেসক্লাব ভবন পরিদর্শনের অনুরোধ জানান। তিনি সাংবাদিকদের আরও দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শও দেন। মীর সাখাওয়াত আলী বাদশা এমপি আরো বলেন, অনলাইনে যে কোনো বিষয়ে ভালো প্রতিক্রিয়া হয়। সংগঠনের সভাপতি বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক এডিশনাল আইজিপি ড. আব্দুর রহিম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. আব্দুস সালাম খান, দৈনিক পাঞ্জেরী’র নির্বাহী সম্পাদক তালুকদার রুমী, মোরেলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এনামুল হক রিপন ও সংগঠনের মহাসচিব রেজাউল ইসলাম রাজু প্রমুখ।