আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতে ৮০ বছরের এক বৃদ্ধাকে উলঙ্গ অবস্থায় গাধার পিঠে করে ঘোরানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। মাত্র এক মাস আগেই রাজস্থান প্রদেশে একই ধরণের ঘটনা ঘটেছিল। সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, রাজস্থানের বিলওয়ারা জেলার চৌহানও কি কামেরি গ্রামে গত সপ্তাহে বর্বরোচিত ওই ঘটনা ঘটে। তবে রোববারই এটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এনডিটিভি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্যাতনের আগে বৃদ্ধাকে ডাইনি বলে অপবাদ দেয়া হয়েছিল। এছাড়া তার বিরুদ্ধে গ্রামের শিশুদের খেয়ে ফেলারও অভিযোগ আনা হয়েছিল।এসব অভিযোগ আনার পর বিচারে বসেন খাপ পঞ্চায়েতের নেতারা। প্রথমে তারা ওই বৃদ্ধার সারা মুখে কালি মাখিয়ে দেন। পরে তাকে উলঙ্গ করে গাধার পিঠে চাপিয়ে গোটা গ্রাম ঘোরানোর নির্দেশ দেয়া হয় ।
এছাড়া পঞ্চায়েত নেতারা তাকে একঘরে ঘোষনা করেছিলেন। বৃদ্ধার সঙ্গে কেউ কথা বললে তাকেও এক লাখ রুপি জরিমানা করা হবে বলে হুমকি দিয়েছিলেন ওই গ্রাম্য নেতারা।
ওই বৃদ্ধার স্বামী নেই। ৩৭ বছর আগে মারা গেছেন। তার ঘরে কোনো ছেলেমেয়েও নেই। ফলে গ্রামের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি তার জমিজমা দখলের চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু এতে ব্যর্থ হয়ে তারা তাকে ডাইনি অপবাদ দেন।
গত মাসে রাজস্থানে এ রকম আরো একটি ঘটনা ঘটেছিল। সেখানকার রাজসামান্দ এলাকায় ৫০ বছর বয়সী এক নারীকে নগ্ন করে গাধার পিঠে চড়িয়ে গ্রামজুড়ে ঘোরানো হয়েছিল। স্বামীর এক ভাইকে খুন করার অভিযোগে তাকে এই শাস্তি দিয়েছিল স্থানীয় পঞ্চায়েত।
এসব গ্রাম পঞ্চায়েতের সব সদস্যই পুরুষ এবং কোনো রকম নির্বাচন ছাড়াই তারা নেতৃত্ব পেয়ে থাকেন। ভারতের প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে এসব পঞ্চায়েত সদস্যরা বিচারের নামে নানা ধরণের কুকর্ম করে থাকেন। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোতে তাদের ব্যাপক প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। তারা ‘অনার কিলিংয়ের’ মত অপরাধের উষ্কানি দিয়ে থাকেন। গ্রামের স্বল্প শিক্ষিত নীরিহ লোকজনের ওপর প্রভাব থাকায় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারাও তাদের ঘাঁটাতে সাহস পান না।