বিনোদন ডেস্ক : ৭ নভেম্বর সকাল ১০টায় না ফেরার দেশে চলে যান বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা খলিল। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সহকর্মীদের অনুরোধে তাকে রোববার বিকেল ৩টার পর বিএফডিসিতে নিয়ে আসা হয়। এ সময় তার মরদেহ রাখা হয় জহির রায়হান অডিটরিয়ামের সামনের খোলা জায়গায়। সেখানেই তাকে শেষ বিদায় জানান তার দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা। এই এফডিসিই খলিলকে অভিনেতা হিসেবে তৈরি করেছিল। তাকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বিএফডিসির মহাপরিচালক এস এম হারুন অর রশিদ, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিশা সওদাগর। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা ও নির্মাতা কাজী হায়াৎ, এটিএম শামসুজ্জামান, সৈয়দ হাসান ইমাম, নায়ক রাজ রাজ্জাক, ববিতা, আলমগীর, উজ্জ্বল, ওমর সানী, ডি এ তায়েব, জাহিদ হাসান শোভন, সম্রাট প্রমুখ। প্রবীণরাই বেশি উপস্থিত ছিলেন। ছিল না নবীন প্রজন্মের কোন শিল্পী।
তথ্যমন্ত্রী শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘খলিল উল্লাহ সাহেব ছিলেন জাত শিল্পী। তিনি একজন বড় মাপের শিল্পী ছিলেন। যে কারণে তিনি নায়ক এবং খল নায়ক সব ধরণের চরিত্রে অভিনয় করে তার একটি জায়গা তৈরি করতে পেরেছিলেন। আমরা তাকে আজীবন সম্মাননাও দিয়েছি। আমি মনে করি খলিল সাহেবের কাজ তার অভিনীত চলচ্চিত্র সংরক্ষণ করতে হবে আগামী প্রজন্মের জন্য। তিনি তার কাজের মাধ্যমে বেঁচে থাকবেন।’
প্রয়াত এই অভিনেতাকে শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হয়েছিলেন বাংলাদেশ আনসারের প্রায় ৩শ সদস্যর একটি বেটেলিয়ান দল। এই দলের প্রধান মাহবুব বলেন, ‘খলিল স্যার দীর্ঘদিন বাংলাদেশ আনসারে চাকরি করেছেন। আমরা চেয়েছিলাম তাকে আমাদের হেড কোয়ার্টারে নিয়ে সম্মান জানাতে। কিন্তু তার পরিবারের অনুরোধে করা গেল না। তবে তার প্রতি বাংলাদেশ আনসারের সম্মান সব সময়ই থাকবে।’
জানাজা নামাজ শেষে খলিলের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় মোহাম্মদপুরে। সেখানেই তার দাফন করা হবে বলে জানান তার ছেলে।
বলে রাখা ভালো, ১৯৩৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ভারতের বীরভূমে জন্মগ্রহণ করেন এ অভিনেতা। তিনি বাংলাদেশ আনসারে তার চাকরি জীবন শুরু করেন। সেই সময় তিনি গণনাট্য সংঘের সদস্য হন। এবং অভিনয় জীবন শুরু করেন। তার অভিনীত প্রথম নাটক উল্কা। এ নাটকের পর তিনি জহির রায়হান ও কলিম শরাফির যৌথ প্রযোজনায় সোনার কাজল নামে ছবিতে নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেন। এরপরে তিনি টানা প্রায় ১১টি ছবিতে নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেন। তিনি ব্যক্তি জীবনে নয় ছেলে ও এক মেয়ের পিতা। তার স্ত্রী রাবেয়া খাতুন। তিনি গুণ্ডা ছবিতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ২০১২ সালে তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়।
৭ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় তিনি রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।