নিজস্ব প্রতিবেদক
ঈদুল আযহা উপলক্ষে সারাদেশে ৭৩টি পয়েন্টে সড়ক-মহাসড়কে পশুর হাট বসানো যাবে না। এসব হাট ও যানজট মনিটরিংয়ের জন্য একটি টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে একজন যুগ্ম-সচিব ও সড়ক বিভাগ থেকে একজনকে সদস্য সচিব হিসেবে এই কমিটিতে রাখা হবে। এ ছাড়া আগামী ১ থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা সিএনজি স্টেশন খোলা রাখা হবে। ঈদের আগের তিনদিন ও ঈদের পরের তিনদিন সারাদেশের মহাসড়কে ভারী কোনো যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুধুমাত্র পশুবাহী, নিত্যপণ্য, পচনশীল ও প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র গাড়ি চলাচল করতে পারবে। বাবুবাজার, নয়াবাজার ও আরমানিটোলা এই তিন স্থানে কোনো কোরবানীর পশুর হাট বসানো যাবে না। সড়ক ও মহাসড়কে অকারণে কোনো ধারনের যানবাহন থামানো যাবে না। এবং সড়ক মহাসড়কে সব ধরনের যানজট দূর করতে ৭৬টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বুধবার দুপুরে রমনা রেস্তোরাঁয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় আয়োজিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে বৈঠকে নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, রেলপথমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব, ১৪টি জেলার প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ছাড়াও সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
ঈদ প্রস্তুতি বিষয়ক এ সভায় ৭৬টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা সিএনজি স্টেশন খোলা রাখা, মহাসড়কে যানজট প্রতিরোধে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান চলাচল বন্ধ রাখা, মহাসড়কের ওপর বা পাশে হাট না বসানো, দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থানগুলোতে রেকারের ব্যবস্থা করা, ভিজিলেন্স টিম ও মোবাইল কোর্টের ব্যবস্থা করা, রাতে নৌপথে বালুবাহী ট্রলার চলাচল বন্ধসহ বেশকিছু সিদ্ধান্ত রয়েছে। এ ছাড়া রাজধানীর নয়াবাজার ও গোলাপবাগ এবং ফরিদপুরের ভাঙ্গায় মালিগ্রাম গরুর হাট ইজারা না দেয়ার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে অনুরোধ করা হয়। পাশাপাশি গরু বহনকারী পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক ও হাইওয়ে পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে আন্তঃমন্ত্রনালয় সভা থেকে। ঈদ উপলক্ষে রাজধানীসহ দেশের সব সিএনজি স্টেশন ১ থেকে ১১ আগস্ট ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগকে চিঠি দেবে সড়ক বিভাগ।
পাশাপাশি মহাসড়কের যানজট নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঈদের আগে ও পরে তিনদিন করে ট্রাক, লরি ও কাভার্ড ভ্যান চলাচল বন্ধ রাখা হবে। অর্থাৎ ৩ থেকে ৮ অক্টোবর মহাসড়কে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে জ্বালানি তেল, কোরবানীর পশু, পচনশীল পণ্য ও গার্মেন্টস রপ্তানি পণ্য এ নির্দেশনার বাইরে থাকবে। এ সময় ট্রেনের সিডিউল ঠিক রাখতে মালবাহী ট্রেন চলাচলও বন্ধ রাখা হবে।
এ ছাড়া ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে রাজধানীর সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী বাস টার্মিনালে পৃথক ৩টি ভিজিলেন্স টিম ঈদের আগের পাঁচদিন সার্বক্ষণিক মোতায়েন থাকবে। টিমগুলো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় রোধ ছাড়াও যাত্রীদের অন্যান্য সমস্যা সমাধানে কাজ করবে বলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী জানান।
বৈঠকে রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, ‘রেলওয়ে শতভাগ যাত্রী সেবা দেয়ার জন্য রেল কর্তৃপক্ষ প্রস্তুত রয়েছে। প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা আমরা করবো। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ও সৈয়দপুর কারখানায় পুরাতন ইঞ্জিন ও কোস মেরামত করা হচ্ছে।’ মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ৯ সেপ্টেম্বর বৈঠক করে যাত্রী সেবা নিশ্চিত করবো।’