ঢাকামঙ্গলবার , ৯ ডিসেম্বর ২০১৪
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি ও অন্যান্য
  5. খেলাধুলা
  6. গল্প ও কবিতা
  7. জাতীয়
  8. তথ্যপ্রযুক্তি
  9. দেশজুড়ে
  10. ধর্ম ও জীবন
  11. প্রবাস
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. বিশেষ প্রতিবেদন
  15. মুক্তমত
আজকের সর্বশেষ সবখবর

হিযবুত তাহ্‌রীর শক্ত ঘাঁটি চট্টগ্রামে

দৈনিক পাঞ্জেরী
ডিসেম্বর ৯, ২০১৪ ১০:১৯ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

CTG
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :
২০০৯ সালে নিষিদ্ধ হওয়া জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহ্‌রীর হঠাৎ করে আরো তৎপর হয়ে উঠেছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে। তারা শক্ত শেকড় গেড়েছে সেখানে। তবে কার নেতৃত্বে কোথা থেকে কীভাবে হিযবুত তাহ্‌রীর তৎপরতা চালাচ্ছে, সে ব্যাপারে পুলিশের কাছে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই।
পুলিশ বলছে, বিভিন্ন মসজিদে লিফলেট বিতরণ, ঝটিকা মিছিলের চেষ্টা এবং নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সাঁটানো পোস্টার ব্যানারে হিযবুত তাহ্‌রীরের তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে। কিন্তু তাদের শেকড়ের সন্ধান মিলছে না।
সর্বশেষ গত শুক্রবার চট্টগ্রাম মহানগরীর আন্দরকিল্লা শাহি জামে মসজিদ এলাকা থেকে সরকারবিরোধী লিফলেট ব্যানারসহ সাতজন হিযুবত তাহ্‌রীর কর্মীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। গ্রেফতারের পর পুলিশের অনুসন্ধানে নগরীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিযবুত তাহ্‌রীরের তৎপর থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয় পুলিশ।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর হিযবুত তাহ্‌রী নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে বিভিন্ন সময়ে সংগঠনটির পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী গ্রেফতার হয়েছে। এদের অধিকাংশই গ্রেফতারের পাঁচ-ছয় মাসের মধ্যেই জামিন পেয়ে জেল থেকে বের হয়ে এসে আবার তাদের কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হচ্ছে। সর্বশেষ গত শুক্রবার চট্টগ্রাম আন্দরকিল্লা শাহি জামে মসজিদে মুসল্লিদের মধ্যে খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে লিফলেট বিতরণের সময় ধাওয়া দিয়ে সাতজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে একজন ব্যবসায়ী, একজন প্রকৌশলী এবং অপর পাঁচজন বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। এর আগে গত ২৬ অক্টোবর চট্টগ্রামে জামায়াতে ইসলামী অধ্যুষিত এলাকা চকবাজার থেকে সাত হিযবুত কর্মীকে গ্রেফতার করে তাদের কাছ থেকে ইসলামি খেলাফত-ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি খসড়া সংবিধান উদ্ধার করে। এই সংবিধানে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে আরবি চালু করার পাশাপাশি দেশের সব মুসলমান নাগরিককে সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করার কথা বলা হয়।
হিযবুত তাহ্‌রীরের গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীরা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তারা তাদের নিষিদ্ধ সংগঠন কর্তৃক প্রণীত খেলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার খসড়া সংবিধানে বিশ্বাস করেন এবং খেলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্যই তারা আন্দোলন করছেন।
হিযবুত তাহ্‌রীর কর্মীদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ৪০ পৃষ্ঠার খসড়া সংবিধানের বিভিন্ন ধারা সম্পর্কে জানা যায়, তাদের সংবিধানে সর্বমোট ১৮৬টি ধারা রয়েছে। তারা রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থাকে এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক করার লক্ষ্যে এই খেলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় বলে সংবিধানে উল্লেখ করা হয়।
হিযবুত তাহ্‌রীরের সংবিধানের ১৮ ধারায় রাষ্ট্রের শাসকদের জন্য চারটি পদ নির্ধারিত করা হয়েছে। এগুলো হলো- খলিফা, মুওয়াউয়িন তাফউয়িদ (প্রতিনিধিত্বকারী সহকারী), ওয়ালি (গভর্নর) ও আ’মিল (মেয়র)। বাকি সব পদ হবে কর্মচারীর। হিযবুত তাহ্‌রীর ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর নিষিদ্ধ হওয়ার ৯ মাস পর ২০১০ সালের ১৬ অাগস্ট তারা এই ‘খসড়া সংবিধান’ প্রকাশ করে।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার ওসি এ কে এম মহিউদ্দিন হিযবুত তাহ্‌রীরের তৎপরতার বিষয়টি স্বীকার করে রাইজিংবিডিকে বলেন, হিযবুত তাহ্‌রীরের কর্মাকাণ্ডের ব্যাপারে পুলিশ সব সময় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। তারা বিভিন্ন মসজিদে মুসল্লিদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ এবং রাতের আঁধারে দেওয়ালে পোস্টারিং করার মাধ্যমে অপতৎপরতা চালাচ্ছে।
তবে বিভিন্ন সময়ে পুলিশ অভিযানে হিযবুত তাহ্‌রীরের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা গ্রেফতার হলেও কারা কীভাবে চট্টগ্রামে হিযবুত তাহ্‌রীরের নেতৃত্বে রয়েছে, সে ব্যাপারে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। গ্রেফতারকৃতরাও সঠিক তথ্য দিতে পারে না। ফলে তাদের নেতাদের গ্রেফতার করা যাচ্ছে না। পুলিশ হিযবুত তাহ্‌রীরের নেতৃত্বদানকারীদের গ্রেফতার করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি ওসি মহিউদ্দিনের।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মন্ডল এ বিষয়ে বলেন, হিযবুত তাহ্‌রীর মসজিদের ভেতর মুসল্লিদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করে তাদের কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু পুলিশ সর্বত্র তাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে রয়েছে। এজন্য পুলিশ কমিশনার এ ব্যাপারে জনসাধারণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।