আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনের মাটিতে বিধ্বস্ত হওয়া যাত্রীবাহী মালয়েশীয় বিমান এমএইচ১৭ এর ধ্বংসাবশেষবাহী ট্রাক এখন নেদারল্যান্ডে পৌঁছেছে। ডাচ বিশেষজ্ঞ দল বিমানটির ধ্বংসাবশেষ পুনরায় জুড়ে দিয়ে, তদন্তের স্বার্থে দুর্ঘটনার আদ্যপান্ত খতিয়ে দেখতে চান।
চলতি বছরের ১৭ জুলাই ইউক্রেনের রাজনৈতিকভাবে উত্তপ্ত হয়ে থাকা রুশপন্থীপ্রধান পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় যাত্রীবাহী বোয়িং ৭৭৭ বিমান, ফ্লাইট নং এমএইচ১৭, ২৯৮ জন যাত্রী নিয়ে বিধ্বস্ত হয়। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা নিয়ে তৎকালীন রাজনৈতিক মাঠ অনেক উত্তপ্ত হয়েছে, রাশিয়া ও ইউক্রেন পরষ্পরের প্রতি কাদা ছোড়াছোড়ি কম করেনি; কিন্তু হয়নি কোন সুষ্ঠু তদন্ত।
উল্লেখ্য, বিধ্বস্ত বিমানটির যাত্রীসংখ্যার দুই তৃতীয়াংশই ছিলেন ডাচ; নেদারল্যান্ডের নাগরিক।
বিমানবাহী ট্রাকগুলো স্থানীয় বিকেল নাগাদ গিজলে-রিজেন শহরের ডাচ বিমানবাহিনীর ঘাঁটিতে এসে পৌঁছুবে খবর পেয়ে, নিহত যাত্রীদের আত্মীয় স্বজনেরা বিমানঘাঁটির সামনে অবস্থান নিতে শুরু করেছেন।
বিমানটিকে নেদারল্যান্ডে নিয়ে আসার পেছনে মৃত যাত্রীদের শোকার্ত আত্মীয় স্বজনদের ভূমিকা রয়েছে। ইতোপূর্বে নিজ দেশে তারা এ ব্যাপারে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন, কেন বিধ্বস্ত বিমানটি মাসের পর মাস ঘটনাস্থলে পড়ে আছে, কেন কোন সুষ্ঠু তদন্ত হচ্ছে না। এরপর, স্বজনদের একাংশ গত সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্তের ভার হাতে নেয়ার জন্যে, জাতিসংঘের কাছে আবেদন জানান।
ডাচ প্রশাসনের টনক নড়ার পর প্রশাসনিকভাবে ইউক্রেনের ‘এমার্জেন্সি সার্ভিসের’ সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এবং কিয়েভের সহায়তায়, ইউরোপের নিরাপত্তা ও সহযোগীতামূলক সংস্থা ‘ওএসসিই’ এর মধ্যস্থতায়, বিধ্বস্ত বিমানটিকে দেশে আনার ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়। এর মধ্য দিয়ে একইসঙ্গে সূচিত হয় নেদারল্যান্ডের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অপরাধকেন্দ্রিক তদন্তমূলক কর্মকাণ্ড।
ডাচ নিরাপত্তা পরিষদ জানায়, ধ্বংসাবশেষগুলোর আলোকচিত্র নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করা হবে, এরপর দেহাবশেষসমূহ যথাসম্ভব জুড়ে দেয়া হবে। এর মধ্য দিয়ে বেরিয়ে আসতে পারে আঘাতকারী অস্ত্রের ধরণসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি, যা বলে দেবে কে ছিল সত্যিকার আক্রমণকারী।