নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকার বিদ্যুৎ গ্যাস ও তেলের মূল্য বৃদ্ধি করলে জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে লাগাতার কর্মসূচির মাধ্যমে তা প্রতিরোধ করতে আবারো ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ গ্যাস ও তেলের মূল্য না বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে এ খাতে যে সীমাহীন দুর্নীতি রয়েছে তা বন্ধ করার জন্য জনগণকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বিএনপির বিস্তারিত বক্তব্য লিখিত আকারে সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মহাজোট ও অনির্বাচিত অবৈধ সরকারের পুরো আমল জুড়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে চলছে সীমাহীন দুর্নীতি ও লুণ্ঠন। বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে তাদের সীমাহীন দুর্নীতি জায়েজ করতে এবং ভবিষ্যতে যাতে বিচারের মুখোমুখি হতে না হয় এ জন্য তারা স্পেশাল ইমারজেন্সি পাওয়ার অ্যান্ড অ্যানার্জি অ্যাক্ট ২০১০ জারি করেছে।’
দফায় দফায় বিদ্যুতের পাইকারি ও খুচরা মূল্য বাড়িয়ে বিদ্যুৎ খাতে লোকসান সামাল দিতে পারছে না উল্লেখ করে এতে বলা হয়, ‘মহাজোট সরকার ও বর্তমান অবৈধ সরকার ছয় বছরের শাসনামলে ছয়বার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। চারদলীয় জোটের শাসনামলে বিদ্যুতের দাম একবার বাড়ানো হয়েছে। অবৈধ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয় দু’বার।’
এসময় ইমডেনিটি আইনের সমালোচনা করে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।
সারাবিশ্বের বিভিন্ন দেশ মানবাধিকার রক্ষার প্রশ্নে সচেষ্ট হলেও বাংলাদেশে রাষ্ট্র নিজেই মানবাধিকার হরণ করছে অভিযোগ করে বিএনপির বক্তব্যে বলা হয়, ‘বিশ্বের সকল রাষ্ট্র মানবাধিকারের প্রশ্নে সচেতন হলেও বাংলাদেশ এর ব্যতিক্রম। এখানে প্রতিনিয়িত মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত। রাষ্ট্র স্বয়ং মানবাধিকার হরণ করছে।’
বিএনপির এই মুখপাত্র অভিযোগ করেন, ‘আওয়ামী লীগ গত ৬ বছর গুন, খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে মানুষের ন্যুনতম অধিকার প্রতিনিয়ত হরণ করছে। আর এ কাজে রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বাংলাদেশের মানবাধিকার শুধু হুমকির মুখে নয়, ধ্বংস হয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। মানবাধিকার রক্ষায় আমরা সবসময়ে আন্দোলন ও মানববন্ধন করে আসছি।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে আজকেও মামলা হয়েছে, তাতে আবার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এ রকম মামলা করে গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমন করার পাঁয়তারা করছে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, মামলা বা গুলি করে আন্দোলন বন্ধ করা যায় না।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম, স্বনির্ভর সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, ঢাকা মহানগরের সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সহ দপ্তর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, আব্দুল লতিফ জনি, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।