আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাজধানী নয়া দিল্লীতে রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথ উদ্যোগে দেশে দশটিরও বেশি পারমাণবিক চুল্লি স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন। ১১ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। জানা গেছে, ভারতের সঙ্গে পারমাণবিক শক্তি ছাড়াও তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনসহ হীরা উত্তোলন ও পরিশোধনেও দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারিত্বে যেতে চায় রাশিয়া। অংশীদারিত্ব ছাড়াও রুশ খনিজ সম্পদের নতুন বাজার সৃষ্টিতে সম্ভাব্য অনুকূল ভূমি হিসেবে ভারতকে পেতে চাইছে রাশিয়া। যার অর্থ, দৃঢ় মুষ্টিতে পরস্পরের হাত ধরতে চলেছে দেশ দুটি।
রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে পারমাণবিক চুল্লি স্থাপনের পরিকল্পনাকে ইতিবাচক উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা বলে অভিহিত করেন মোদি। রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি পুতিন এমন এক সময়ে ভারতের এ নবনির্বাচিতের সঙ্গে সাক্ষাত করতে এলেন, যখন তার দেশ উপর্যুপরি অর্থনৈতিক অবরোধে আটক হয়ে অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক প্রভাব ক্রমশ হারিয়ে ফেলছে। সুতরাং কিছু পুরনো সম্পর্ক ঝালিয়ে নিয়ে এ থেকে পরিত্রাণের ভিন্নধর্মী উচ্চাভিলাষ রাশিয়ারও আসা স্বাভাবিক, এমনটাই ভাবছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা। পশ্চিমে প্রভাব ক্রমশ প্রভাব হারিয়ে, তা পুনরুদ্ধারে পুতিন পূর্বের দিকে ঝুঁকছেন, এমন মন্তব্যও করেছেন অনেক কূটনীতিক।
ভারতের রুশ বিশেষজ্ঞ কূটনীতিজ্ঞ নন্দন উনিকৃষ্ণ বলেন, পুতিন বাকি বিশ্বকে তো বটেই, বিশেষ করে একটি বলয়কে দেখাতে চান, তিনি একা নন। তার সঙ্গে বন্ধু হয়ে আছে এখনও ব্রিকস (BRICS= Brazil, Russia, India, China, South Africa)। আর ভারত পূর্ণরূপে উন্নতির পথে হাঁটছে এবং এ সময় চাইছে রাশিয়া তার প্রাযুক্তিক ও সামরিক কারখানাগুলো ভারতের মাটিতেও স্থাপন করুক।
রুশ রাষ্ট্রপতির চলতি ভারত সফরে দুই দেশ, প্রায় ১০০০ কোটি মার্কিন ডলারের বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। বলা হচ্ছে, এর মধ্য দিয়ে তারা গত শতকের পঞ্চাশের দশকের মতো সুসম্পর্কে ফিরে যেতে চায়।