রাজশাহী প্রতিনিধি
দুই শিশুকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার সময় এক নারীকে হাতে নাতে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে স্থানীয়রা। এলাকাবাসী বলেছে ওই নারী একজন ‘ছেলেধরা’। কিন্তু তার স্বামীর দাবি, সে মানসিক ভারসাম্যহীন। উভয়পক্ষের এমন অভিযোগে বিপাকে পড়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহী মহানগরের হাদির মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আটক ওই নারীর নাম ফৌজিয়া ইয়াসমিন। তার বাড়ি মহানগরের উপশহর এলাকায়। বর্তমানে তাকে বোয়ালিয়া থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পুলিশ বলছে, আটক ফৌজিয়া ইয়াসমিন মানসিক ভারসাম্যহীন না ছেলেধরা তা যাচাই করার পরেই তাকে থানা থেকে ছাড়া হবে এর আগে কোনো ব্যবস্থা নয়।
এলাকাবাসী জানায়, তিনি গত দুইদিন ধরে হাদিরমোড় এলাকার বিভিন্ন স্কুলের সামনে গিয়ে স্কুল শুরু ও ছুটির সময় সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে খাদেমুল ইসলাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শিশুকে সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়ার সময় এলাকাবাসী তাকে হাতেনাতে আটক করে। পরে থানায় খবর দিয়ে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ঘটনার শিকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ওই দুই শিশুর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা তিনজন মিলে স্কুলে এসে পাশেই থাকা খাদেমুল ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে খাবার কিনতে যায়। ওই সময় ফৌজিয়া তাদের আইসক্রীম কিনে দিয়ে একটি কামড় বসিয়ে ওই দুই শিশুকে খেতে দেয়। তারপর তাদের সঙ্গে করে নিয়ে গলিপথ ছেড়ে প্রধান রাস্তায় উঠে আসার চেষ্টা করে।
স্কুলের পাশের বাড়ির সবেদা বেগম জানান, ‘অপরিচিতি এক নারীর সঙ্গে স্কুলের দুই শিশুকে যেতে দেখে সন্দেহ হলে তাকে আটক করা হয়। সে প্রথমে বলে তার নাতি স্কুলে পড়ে। বাড়ির ঠিকানা জানতে চাইলে কোনো ঠিকানা সে বলেনি। এ সময় আশেপাশের লোকজন এসে তাকে আটক করে।’
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কল্পনা পারভীন জানান, স্কুল শুরুর আগে ঘটনাটি ঘটেছে। তিনি স্কুলে আসার পর ঘটনাটি জানতে পারেন। শিশুরা স্কুলে ভালো অবস্থায় আছে। আশেপাশের লোকজন তাকে জানিয়েছে ওই নারীর দুইদিন ধরে স্কুলের শুরু ও ছুটির সময় জানার চেষ্টা করেছেন।
মহানগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সোবহান জানান, ফৌজিয়া উপশহরের ৫৩/২ নম্বর বাড়িতে থাকেন। তার স্বামীর নাম সোলাইমান। তিনি থানায় এসে জানিয়েছেন, স্ত্রী মানসিক ভারসাম্যহীন। শিশুদের অভিভাবকরা এখন পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ করেন নি। তবে ফৌজিয়া আসলেই মানসিক ভারসাম্যহীন কিনা সে ব্যাপারে বর্তমানে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাকে থানাতেই আটক রাখা হবে বলে জানান ওসি।