রাঙামাটি প্রতিনিধি : পাহাড়ি-বাঙালিদের জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বাঙালিদের বাগানের গাছ কেটে ফেলা এবং পাহাড়িদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে পাহাড়িদের অন্তত ১০টি বাড়ি পুড়ে যায়।
সোমবার রাতে রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার বগাছড়ি এলাকায় বাগানের গাছ কাটার পর মঙ্গলবার সকালে বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার প্রতিবাদে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের কুতুকছড়িতে সড়ক অবরোধ করে পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউপিডিএফ।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার রাতে অজ্ঞাত দুষ্কৃতিকারীরা নানিয়ারচরের বগাছড়ির ১৪ মাইল এলাকায় বাঙালিদের প্রায় ১০ একর জমির আনারস ও সেগুন বাগানের প্রায় ২০ হাজার চারাগাছ কেটে দেয়।
এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ বাঙালিরা সকালে ওই এলাকায় কয়েকটি পাহাড়ি বাড়িঘরে আগুন দিয়ে পুড়ে দেয়।
এর প্রতিবাদে ইউপিডিএফ রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়ক অবরোধ করে। ঘটনার পর পরই রাঙামাটির জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের রাঙামাটি জেলা সভাপতি বাবলু চাকমা জানান, ওই এলাকায় জমি নিয়ে অনেকদিন ধরেই বিরোধ চলছিল। সেখানে বাঙালীরা পাহাড়িদের জমিতে জোর করে আনারস, সেগুনসহ বিভিন্ন বাগান করে প্রতি বছর। গতরাতে কে বা কারা তাদের বাগান কেটে দিয়েছে তা না জেনেই তারা সকালে পাহাড়িদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে এবং এতে প্রায় ১০টি বাড়ি পুড়ে যায় এবং বিহারের বৌদ্ধমূর্তিও চুরি করে নিয়ে যায় তারা।
অন্যদিকে নানিয়ারচর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান জানিয়েছেন, সোমবার রাতে পাহাড়িরা বাঙালিদের প্রায় ১০ একর জায়গার আনারসের চারা কেটে দিয়েছে। প্রায় ২০ হাজার সেগুন গাছের বাগানের চারাও কেটে দিয়েছে। প্রতিবছরই এইভাবে আমাদের বাগান ধ্বংস করে দেয়। নিজেদের দোষ চাপা দেয়ার জন্য তারা এখন নিজেদের খালি বাড়িতে আগুন দিয়ে বাঙালীদের উপর দোষ চাপাচ্ছে।
ঘটনার প্রতিবাদে বাঙালিরা সড়ক অবরোধ করতে চাইলেও আইনশৃঙ্খলাবাহিনী আমাদের সরিয়ে দেয়।
এ ব্যাপারে নানিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, রাতে আনারস ও সেগুন বাগানে আগুন দেয়ার ঘটনার পর সকালে কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।’