আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের পেশোয়ারে সেনা পরিচালিত স্কুলে তালেবান হামলায় নিহত শিশুদের কয়েকজনের দাফন সম্পন্ন হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ওই হামলায় স্কুলের শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা মিলিয়ে ১৪০ জন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা ১৩২। আহত হয় আরো ১২৫ জন। এছাড়া সেনা হামলায় সাত হামলাকারী জঙ্গিও নিহত হয়।
নিখোঁজ শিশুদের খোঁজে পেশোয়ারের হাসপাতালগুলোতে এখনও স্বজনেরা ভিড় করছেন বলে বিবিসি জানিয়েছে। মঙ্গলবার বেশ কয়েকজন শিশুর দাফন সম্পন্ন হয়। এদের মধ্যে একজনের বয়স ছিল ১৫। সে ছিল অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। তালেবান হামলায় নিহত ১০ বছরের গুলশেরের নামাজে জানাজার সময় তার চাচা সাজিদ খান এএফপিকে বলেন, তার ভাইয়ের ছেলে ডাক্তার হতে চেয়েছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা হয়তো এসব জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিশোধ নিতে পারব না। তবে আল্লাহ তাদের বিচার করবেন। আমারা আল্লাহর কাছেই ফরিয়াদ জানাবো।’
এদিকে এই নির্মম হত্যার ঘটনায় পাকিস্তানে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ। মঙ্গলবার থেকে ওই শোক শুরু হয়েছে। এছাড়া শিশুদের প্রতিটি রক্তবিন্দুর বদলা নেয়া হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। তার এ ঘোষণার পর জঙ্গি বিরোধী অভিযান শুরু করেছে সেনাবাহিনী। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বিশ্বের আরো অনেক নেতা এ নির্মম হত্যাযজ্ঞের নিন্দা জানিয়েছেন। এছাড়া হামলার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সম্প্রতি শান্তিতে নোবেল বিজয়ী পাক কিশোররী মালালা ইউসুফজাই।
এমনকি পাকিস্তানি তালিবানদের সঙ্গে একই মতাদর্শে বিশ্বাসী সেই আফগান তালিবানও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে। এক শোক বিবৃতিতে তারা বলেছে, নারী ও শিশুদের হত্যা করা ইসলাম সমর্থন করে না।
মঙ্গলবার মোট সাত জঙ্গি নিরাপত্তা বাহিনীর ছদ্মবেশে পেশোয়ারের আর্মি পাবলিক স্কুলে ঢুকে নির্বিচারে গুলি করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের হত্যা করতে শুরু করে। তাদের প্রত্যেকেই ছিল আত্মঘাতী বোমায় সজ্জিত। পরে অবশ্য পাল্টা হামলা চালিয়ে জঙ্গিদের সবাইকে হত্যা করে সেনাবাহিনী। দীর্ঘ আট ঘণ্টা ধরে চলে এই সেনা অভিযান। স্কুলটি এখন সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এ হামলার পক্ষে সাফাই গেয়ে পাকিস্তানি তালিবানের এক মুখপাত্র বলেছেন, উত্তর ওয়াজিরিস্তান ও খাইবার অঞ্চলে জঙ্গি-বিরোধী হামলার প্রতিশোধ হিসেবে তারা সেনাবাহিনী পরিচালিত ওই স্কুলে এই হামলা চালিয়েছে।