নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমান আলোচনায় থাকার জন্যই ধারাবাহিকভাবে একই ধরনের জঘন্য, মিথ্যাচারে পূর্ণ বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ আওয়ামী লীগের।
দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তারেক রহমানের এই ধরনের বক্তব্য নতুন কোনো ঘটনা নয়। ধারাবাহিকভাবে একই ধরনের জঘন্য, মিথ্যাচারে পূর্ণ বক্তব্য দিয়ে আমাদের সমুহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে বিতর্কিত করে সে নিজে আলোচনায় থাকতে চায়।’
বৃহস্পতিবার সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজকে এমন একটি বিষয় নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি, যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। গভীর ক্ষোভ ও পরিতাপের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে গত ১৬ ডিসেম্বর লন্ডনে তারেক রহমান বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক, দীর্ঘ মুক্তি সংগ্রাম, স্বাধীনতা যুদ্ধ, লাখো শহীদের আত্মদান, মা বোনের সম্ভ্রমহানি অর্থাৎ বাঙালি জাতির মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহাসিক বিভিন্ন বিষয়াদি সম্পর্কে যে ভিত্তিহীন, শঠতা ও প্রতারণামূলক বক্তব্য রেখেছে এ নিরিখেই আজকের এই সংবাদ সম্মেলন।’
হাছান বলেন, ‘পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই’র ক্রীড়ানক জিয়াউর রহমান-খালেদা জিয়ার কুপুত্র তারেকের মুখেই মিথ্যাচারে পূর্ণ জঘন্য বক্তব্য শোভা পায়। দীর্ঘ সময় যারা মাদকাসক্ত, নেশাসক্ত জীবন-যাপন করে তারাই এ ধরনের বিকৃত, উন্মাদ, বুনো উন্মত্ততায় দিকভ্রান্ত হয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যে লিপ্ত হয়। এসব বক্তব্য মানসিক বিকারগ্রস্তরাই শুধু বলতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা জিয়াউর রহমান নিজেও যদি বিকারগ্রস্ত তারেক রহমানের এই অশোভন, কুরুচিপূর্ণ ও চরম মিথ্যাচার শুনতে পেতেন তবে তিনি কবরের মধ্যেই হয়তো লজ্জায় কাত হয়ে শুয়ে পড়তেন।’
হাছান আরো বলেন, ‘তারেক রহমান বলেছেন- আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধ করেনি, অথচ মুক্তিযুদ্ধের সময় তারেক রহমানের পিতা জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকারের কাছ থেকেই বেতন ভাতা গ্রহণ করেন এবং সেই সরকারেরই সৃষ্ট একটি সেক্টরের কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। তারেক রহমান তার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে প্রকৃতপক্ষে তার পিতার মুক্তিযুদ্ধকালীন সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্বকেও অস্বীকার করছেন।’
তিনি বলেন, ‘হত্যা, সন্ত্রাস, লুণ্ঠন, দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিদেশে পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে ‘রাজনীতি করবেন না’ বলে মুচলেকা দিয়ে বিদেশে পাড়ি জমানো অর্বাচীন তারেক রহমান যে ধৃষ্ঠতাপূর্ণ অপরাধ করে চলেছেন তা ক্ষমার অযোগ্য। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, মুক্তিযুদ্ধের পর পলায়নপর পাক হানাদার বাহিনী ও তার এদেশীয় দোসর জামায়াত, রাজাকার, আলবদর, আলশামসদের গণধোলাইয়ে যে পরিণতি হয়েছিল, সে একই পরিণতি তারেকের ভাগ্যেও জুটবে।’
উল্লেখ্য, ৪৪তম বিজয় দিবস উপলক্ষে গত সোমবার ইস্ট লন্ডনের দ্যা অট্রিয়াম অডিটরিয়ামে যুক্তরাজ্য বিএনপির আটদিনের অনুষ্ঠানমালার সপ্তম দিনের সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ মুজিব এখন আওয়ামী লীগের লালসালু। এই লালসালুকে ঘিরে থাকা ভণ্ডরাই নিজেদের স্বার্থে যাকে তাকে রাজাকার আখ্যা দেয়।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দাবি করে তাদের দল নাকি মুক্তিযুদ্ধের দল। অথচ চোরের দল, চাটার দল আখ্যা দিয়ে শেখ মুজিব নিজেই আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। এমন একটি কাজ করার জন্য তাহলে তো শেখ মুজিবই বড় রাজাকার।’