আন্তর্জাতিক ডেস্ক : স্বাধীন এবং সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির প্রত্যাশায় জাতিসংঘে আনা প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ‘সমস্যা নেই’ বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। বুধবার এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিষ্কার করেন তিনি। বৃহস্পতিবার এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
প্রস্তাবে আগামী দুই বছরের মধ্যে ইসরাইলকে পশ্চিমতীর থেকে সরে যাবার আহ্বান জানানো হবে।
জন কেরি বলেন, ‘আমরা জানি না প্রস্তাবে কি ধরনের ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। এখনো আমরা সারাংশও দেখিনি।’
তার ভাষায়, ‘প্রস্তাবের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো আপত্তি ছিল না। ভাষাগত বিষয়ে কিছু জটিলতা ছিল মাত্র। কিন্তু সময়ে সময়ে সেগুলোয় পরিবর্তন আনা হয়েছে।’ প্রস্তাবনা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কোনো উত্তেজনাকর পরিস্থিতিরও সৃষ্টি হয়নি বলে জানান তিনি।
তবে মঙ্গলবার আল জাজিরার খবরে বলা হয়, ফিলিস্তিনের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদে নিজেদের ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। লন্ডনে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি তাদের এ হুমকি দেন।
এ বিষয়ে সাংবাদিকরা বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জেন পাসকির মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান।
ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র এর আগেও জাতিসংঘে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার বিষয়ে আনা বিভিন্ন প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভেটো দিয়েছিল।
তিনদিনের ইউরোপ সফর শেষে কেরি বুধবার জাতিসংঘে পৌঁছান। সেখানে পৌঁছে তিনি জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের প্রধান আলোচক সায়েব এরাকাত, ইউরোপের বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন।
খবরে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ জর্ডানকে তাদের পক্ষ থেকে প্রস্তাবটি জাতিসংঘে তোলার আহ্বান জানিয়েছে। প্রস্তাবে দখল করা পশ্চিম তীর থেকে ইসলাইলকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের পূর্ণাঙ্গ সদস্য পদ না পাওয়ায় ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের পক্ষে ওই প্রস্তাব তোলা সম্ভব হচ্ছে না। নিয়মানুযায়ী নিরাপত্তা পরিষদে কেবল জাতিসংঘ সদস্যরাই কোনো প্রস্তাব আনার সুযোগ পেয়ে থাকে। যদিও ফিলিস্তিনকে পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের মর্যাদা দিয়েছে জাতিসংঘ।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের এক উর্ধ্বতন উপদেষ্টা মঙ্গলবার রাতে সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমরা বুধবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আমাদের প্রস্তাবটি পেশ করব।’
এদিকে ফিলিস্তিনিদের এই প্রচেষ্টাকে বানচাল করতে তৎপর রয়েছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু এই খসড়া প্রস্তাবের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘এ ধরনের প্রচেষ্টা ইসরায়েলের নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। আমরা এ পদক্ষেপ প্রতিহত করব।’
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় একটি বিকল্প প্রস্তাবের পক্ষে মত দিয়েছে। তবে তাদের ওই প্রস্তাবে পশ্চিমতীর থেকে ইসরায়েলের প্রত্যাহারের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
প্রস্তাবে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত বন্ধে দুই রাষ্ট্রের সহাবস্থান নিয়ে ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলকে দু বছরের মধ্যে একটি সমাধান খুঁজে বের করার তাগিদ দেয়া হয়েছে।